Latest Post
92 অন্যান্য 51 অর্থনীতি 24 আইন ও আদালত 76 আন্তর্জাতিক 613 এক ঝলক 3 কক্সবাজার 1 কবিতা 22 কিশোরগঞ্জ 4 কুড়িগ্রাম 6 কুমিল্লা 1 কুষ্টিয়া 3 কৃষি 107 কৃষি ও প্রকৃতি 10 ক্রিকেট 1 খাগড়াছড়ি 73 খেলাধুলা 49 গণমাধ্যম 12 গাইবান্ধা 1 গাজীপুর 17 চট্টগ্রাম 5 চাঁদপুর 5 চাঁপাইনবাবগঞ্জ 2 চুয়াডাঙ্গা 14 জয়পুরহাট 1 জাতীয় 3 জামালপুর 1 জোকস 6 ঝনিাইদহ 246 ঝালকাঠি 12 ঝিনাইদহ 4 টাঙ্গাইল 44 ঠাকুরগাঁও 39 ঢাকা 1 থী 4 দিনাজপুর 4807 দেশজুড়ে 42 ধর্ম 3437 নওগাঁ 14 নাটোর 2 নারায়ণগঞ্জ 1 নিহত ২ 1 নীলফামারীর 2 নেত্রকোনা 1 নোয়াখালী 3 পঞ্চগড় 4 পিরোজপু 2 প্রকৃতি 2807 প্রথম পাতা 23 প্রবাস 1 ফরিদপুর 17 ফিচার 8 ফুটবল 1 ফেনী 94 বগুড়া 2 বলিউড 58 বাগমারা 84 বিএমএসএফ 31 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 53 বিনোদন 51 বেনাপোল 2 ব্রাক্ষণবাড়িয়া 1 ব্রাহ্মণবাড়িয়া 51 ভিডিও 18 ভোলা 8 ভ্রমণ 59 ময়মুনসিংহ 1 মাগুরা 1 মাদারীপু 2 মাদারীপুর 1 মানিকগঞ্জ 1 মেহেরপুর 495 যশোর 5 রংপুর 103 রাজনীতি 3 রাজবাড়ী 95 রাজশাহী 3 লক্ষ্মীপুর 24 লাইফস্টাইল 2 লালমনিরহা 41 শিক্ষা 1 শ্রীপুর 891 সকল জেলা 2 সাতক্ষীরা 9 সিরাজগঞ্জ 3 সিলেট 63 সুনামগঞ্জ 31 স্বাস্থ্য 4 হবিগঞ্জ 1 হলিউড 10 bmsf

করোনা সংকটে চট্টগ্রামের পাশে এ জনপদের সন্তানেরা

আবু আজাদ: দেশে গত মার্চে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শুরুর পর মে মাসে চট্টগ্রামের পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে শুরু করে। জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করে প্রতিদিনই। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্লোগান ওঠে— ‘শ্বাস নিতে চায় চট্টগ্রাম’। সেই স্লোগান ছুঁয়ে যায় সাত সাগর আর তেরো নদীর ওপারে থাকা এ মাটির সন্তানদেরও। তাই তো দেশের মানুষকে রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাষ্ট্র থেকেও সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন তারা। চট্টগ্রামের জন্য ‘অক্সিজেন’ জোগান দিতে বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন এ জনপদের সন্তানরা।

সম্প্রতি ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অব নর্থ আমেরিকা’র সাবেক সভাপতি ডা. বি এম আতিকুজ্জামানের ডাকে সাড়া দিয়ে এক অনলাইন বৈঠকে নিজেদের চলমান কার্যক্রম ও পরিকল্পনার এসব বিষয়ে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও অ্যালামনাইয়ের সদস্যরা। চলমান করোনাভাইরাস মহামারিতে চট্টগ্রামের মানুষের প্রয়োজনীয়তা জানতে ও তাদের পাশে দাঁড়াতে পরামর্শমূলক এ ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

বি এম আতিকুজ্জামানের সঞ্চালনায় বৈঠকে অংশ নেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শামীম হাসান, আমেরিকায় বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জিয়া করিম ও অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু আজাদ।

বৈঠকে ডা. বি এম আতিকুজ্জামান বলেন, এই মুহূর্তে দেশে করোনার একটি হটস্পট চট্টগ্রাম। সেখানে এ পর্যায়ে সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনের খবরই আমরা চট্টগ্রামের দুরবস্থার বিষয়ে শুনছি। এ অবস্থায় ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অব নর্থ আমেরিকা’ অতি সম্প্রতি চট্টগ্রামের জন্য অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, এইচএফএনসি, ন্যাজাল ক্যানোলা, পালস অক্সিমিটার পাঠানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথম চালান পৌঁছে যাবে শিগগিরই। আমাদের লক্ষ্য কম করে হলেও একশ কনসেনট্রেটর। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অস্ট্রেলিয়া অ্যালামনাই এগিয়ে এসেছে। এছাড়া আমেরিকা থেকে ডা. শাহিন, ডা. জিয়া করিম, ডা. পারভেজ, ডা. মিশকাত এ লক্ষ্যে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অব নর্থ আমেরিকাও তার কাজ শুরু করেছে।

এ সময় চট্টগ্রামের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরেন অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু আজাদ। তিনি জানান, গত ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষা শুরুর পর ৩ এপ্রিল প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর পরের ৪০ দিনে চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১০৫ জন। কিন্তু পরের ৪৬ দিনে সে সংখ্যা বেড়েছে ছয় হাজারের বেশি। এছাড়া করোনা পরীক্ষা ছাড়াই অনেক রোগী মারা যাচ্ছে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে। নগরে মরদেহ দাফন ও দাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাবে করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর তারা প্রায় ৬০০ মানুষের মরদেহ দাফন বা দাহ করেছেন। অথচ সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবে সেদিন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা মাত্র ১৩০!

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শামীম হাসান বলেন, আমি সম্মানিত বোধ করছি আমাকে এখানে ডাকার জন্য। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছেন অ্যালামনাই ও আমাদের সোনার সন্তানরা। তাদের মন আমাদের জন্য কাঁদে। তারা আমাদের জন্য চিন্তা করেন। বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে আমরা এটা উপলব্ধি করতে পেরেছি। তাদের এই ভালোবাসা বুকে ধারণ করে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমি সুচারুভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি।


করোনায় চমেক হাসপাতালের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সুদক্ষ পরিচালক রয়েছেন। তার অধীনে চিকিৎসকরা সেবা দিয়ে থাকেন। করোনা সংক্রমণ শুরুর আগে আমাদের ৪৪টি ডিসিপ্লিনে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছিলাম। যখন করোনা সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করলো তখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিট তৈরি না করে আর থাকতে পারিনি। আপনারা জানেন যে, কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে শুরু করে, ফেনী, কুমিল্লা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার রোগী, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার কোটি মানুষ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা নিয়ে থাকেন। তাদের সুরক্ষার জন্য চমেকে আমরা প্রথমে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া নিয়ে সতর্ক ছিলাম। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট করা হয়। পরে আরও একটি ওয়ার্ড নিয়ে ১৫০ শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে প্রায় ২০০ রোগী থাকে ফ্লোরিংসহ। আরও একটি ওয়ার্ড করোনা রোগীদের দেয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

অধ্যক্ষ শামীম হাসান বলেন, আমরা পর্যালোচনা করে দেখতে পাই, এর ব্যবস্থাপনার জন্য যা যা লাগে, প্রথমে রোগ শনাক্তকরণ, পরে তার সাপোর্ট। সাপোর্টে আমরা সিমটমেটিক ট্রিটমেন্টগুলো দিয়ে থাকি। সাথে তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। আমাদের পোর্টেবল এক্সরে আছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি আলাদা অক্সিজেন প্ল্যান্ট রয়েছে। সে প্ল্যান্টের মাধ্যমে আমরা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেছি।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরুর পর আমরা যখন প্র্যাকটিক্যালি মাঠে নামলাম তখন দেখলাম এ সমস্ত রোগীর অক্সিজেন সার্কুলেশন কমে যায়। অক্সিজেন গ্রহণ করার এক ধরনের প্রক্রিয়া, সেখানে ফুসফুসে এক ধরনের সমস্যা হয়। সে কারণে একটি বিশেষ ব্যবস্থায় তাকে অনেক বেশি পরিমাণ অক্সিজেন (প্রতি মিনিটে ৩০ থেকে ৬০ লিটার) দিতে হয়।’

হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা বাঁচাতে পারে হাজার জীবন
শামীম হাসান বলেন, ঈদের দিন রুমী নামে একজন ডাক্তার মারা যান। তিনি মা ও শিশু হাসপাতালে কাজ করতেন। সেখানে তার একটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ছিল। ওই ক্যানোলাসহ তাকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ডা. রুমী মারা যাওয়ার পর অর্থোপেডিক্সের একজন ডা. সহযোগী অধ্যাপক ছমিরুল তখন অসুস্থ, একদম খুব খারাপ অবস্থায় পড়েছিল। পরে রুমীর সেই হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে তোলা হয়। সে সময় যদি রুমীর হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা না পেতাম তাহলে ডা. ছমিরুলকেও বাঁচানো সম্ভব ছিল না।

তিনি বলেন, তখন আমাদের টনক নড়লো, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা জিনিসটা কী, তখন থেকে এটা নিয়ে আমরা মাথা ঘামালাম। দেখলাম যে আমাদের দেশে তিন থেকে সাত লাখ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা ডাক্তাররাই চিন্তা করলাম প্রতিজনে ২০-৩০ হাজার টাকা দিয়ে ৭০ লাখ টাকার মত হয়, এটা নিয়ে আমরা কেনার পরিকল্পনা করলাম। কিন্তু সচিব মহোদয় বললেন, তোমরা সরকারের ওপর ডিপেন্ড না করে নিজেরা কিনছো, এটা খারাপ দেখাবে। তাই আমরা এটা বাদ দিলাম। পরে বাজার যাচাই করতে গিয়ে দেখলাম তিন লাখ, পাঁচ লাখ, সাত লাখ টাকার জিনিস ১৫ লাখ টাকা হয়ে গেলো।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শামীম হাসান বলেন, নিজেরাই হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা কেনার পরিকল্পনা যখন বাতিল হয়ে গেলো, সে সময় অস্ট্রেলিয়া থেকে চমেক ৩৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আমাদের চারটা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা পাঠাবে বলেছিলেন। তাতে আমরা কিছুটা আশ্বস্ত হলাম। এরই মধ্যে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্ররা এগিয়ে এলেন, তারা আমাদের পোর্টেবল ভেন্টিলেটর দেয়ার কথা বললেন। পোর্টেবল ভেন্টিলেটরের দাম প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা। আমরা এটি নিয়ে স্টাডি করলাম, এটি দিয়ে অক্সিজেন ফ্লো দেয়া যায়। এখন আমরা ১০টি পোর্টেবল ভেন্টিলেটর পেয়েছি। ঢাকা থেকে চারটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা এসেছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আরেকজন ১০টি পাঠাচ্ছেন। সর্বশেষ জিয়া করিম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তিনি আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আমাদের কী লাগবে? তখন আমরা একটি মিটিং করলাম। মিটিং করে যে সমস্ত যন্ত্রপাতি তার একটি লিস্ট করলাম, সে লিস্ট জিয়া করিমকে পাঠানো হয়েছে। জিয়া করিম স্থানীয় একটি গ্রুপের মাধ্যমে জিনিসগুলো কিনে আমাদের অনুদান হিসেবে দিচ্ছেন। আমি সৌভাগ্যবান যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ হিসেবে সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চমেকের সাবেক ছাত্ররা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তারা আমাদের সাহায্য করতে চাচ্ছেন, যেন আমরা সুস্থ থাকি। নিজেরা সুস্থ থেকে জনগণের সেবা করতে পারি।

ডা. জিয়া করিম বলেন, আমরা যখন দেখলাম চট্টগ্রামের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করলো, তখন একটি মিটিং করলাম, মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত ছিল আমরা কিছু টাকা তুলবো, টাকা তুলে কীভাবে কোভিড-১৯ সিচুয়েশনে চমেককে সহায়তা করা যায়। তখন একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হলো। আমরা ডা. মিজান, ডা. শামীম ও ডা. কাজলের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করছি। পুরোদমে টাকা তোলা শুরু করি, আমাদের বাজেট ছিলো হান্ড্রেড থাউজেন্ড ডলার। ওই টাকা আমাদের জোগাড় হয়ে গেছে। এখন আমরা আশা করছি এটা আমরা আরও একটু বাড়াতে পারবো। লোকজন সাহায্য করতে চাচ্ছে। মাঠের পর্যালোচনা থেকে আমরা যেটা অনুধাবন করলাম। চট্টগ্রামে এখন যেটা প্রয়োজন সেটা হলো হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা। পরে আমরা এসব কেনার জন্য বাংলাদেশে যোগাযোগ শুরু করি। ইতোমধ্যেই একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি। চারটা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা কেনার ২৫ শতাংশ টাকা আমরা ভলেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনকে দিই। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এগুলোর ডেলিভারি হবে। এর মধ্যে আরও অনেকে আছে যারা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সহায়তা করতে ইচ্ছুক।

তিনি বলেন, শুধু হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা হলেই হবে না, আমাদের দেখতে হবে যে আইসিইউ সাপোর্ট আছে কি-না? আইসিইউ বেড আছে কি-না? এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো, আমরা কি আরও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দেব, নাকি অন্য কিছু। ডা. কাজন আরও কিছু জিনিস চেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, এন৯৫ মাস্ক, পিপিই, পালস অক্সিমিটারসহ আরও কিছু। পরবর্তী ধাপে সেগুলোর ব্যবস্থা আমরা করবো। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতালেও দেয়া যাবে। কিছু ফিল্ড হাসপাতাল হচ্ছে সেখানে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দেয়া না গেলেও রেগুলার অক্সিজেন দিয়ে আমরা সাহায্য করতে পারবো।

আইসিইউ নিয়ে চমেক হাসপাতালের পরিস্থিতি তুলে অধ্যক্ষ শামীম হাসান বলেন, যখন করোনা পরিস্থিতি শুরু হয়নি, তখন আমাদের জেনারেল আইসিইউ ছিলে ১২টি বেডের, পেরিট্রিক আইসিইউ ছিল ১২টি বেডের, কার্ডিয়াক সার্জারিতে আট বেড, কার্ডিয়াক মেডিসিনে ১২ বেড। এখন যখন আমরা করোনা ওয়ার্ড করলাম, সেখানে আমাদের ১০টি আইসিইউ বেডের সংযোজন করা হয়। এসময় সকল সুবিধাসহ ভেন্টিলেটর ছিল চারটি, এর মধ্যে টিকে গ্রুপ থেকে পেয়েছি ১০টি, ইয়ং ওয়ান কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি ২০টি হাইকোয়ালিটি বেড দিয়েছেন, সেগুলো আইসিইউ বেডের মতই।

বৈঠকের শেষ পর্যায়ে ডা. বি এম আতিকুজ্জামান জানান, করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামকে আরও বড় পরিসরে সহায়তার জন্য তারা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

আজ মাধ্যমিক ও কারিগরিতে যেসব ক্লাস

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় টেলিভিশনে পাঠদান কার্যক্রম সম্প্রচার শুরু হয়েছে। ছুটির দিন বাদে অন্যান্য দিনে জাতীয় সংসদ টেলিভিশনে মাধ্যমিকের বিভিন্ন স্তরে পাঠদান সম্প্রচার করা হচ্ছে। বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে মাধ্যমিকে ৫টি ও কারিগরির তিনটিটিসহ মোট ৮টি বিষয়ের ক্লাস প্রচার করা হবে।

গত শনিবার মাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের চলতি সপ্তাহের ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে মাধ্যমিকে ও কারিগরির ২১ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত যেসব ক্লাস সম্প্রচার করা হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
বুধবার মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের পাঁচটি ক্লাস করানো হবে। দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত স্টুডিওতে ধারণ করা এসব ক্লাস সম্প্রচারিত হবে। তবে এর আগে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে কারিগরি শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়ে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলবে।

ক্লাস রুটিনে বলা হয়েছে, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তার আওতাধীন প্রতিষ্ঠান এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও শ্রেণি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে অবহিত করবেন। জাতীয় সংসদ অধিবেশন পরিচালনা হওয়ার কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাস সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে ক্লাস রুটিন পরিবর্তন হতে পারে। আগামী সপ্তাহে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) ওয়েবসাইটে নতুন ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হবে।

প্রতিটি ক্লাস ২০ মিনিট করে প্রচার করা হচ্ছে। তার সঙ্গে প্রতিদিনের শিক্ষার্থীদের জন্য হোমওয়ার্ক (বাসার কাজ) দেয়া হবে। পরদিন তা টেলিভিশনের স্ক্রিনে সঠিক উত্তরগুলো দেখানো হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষার্থীদের এসব বাসার কাজের খাতা মূল্যায়ন করে নম্বর দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাউশি।

পাশাপাশি টেলিভিশনে প্রচার হওয়া সব ক্লাস কিশোর বাতায়নে দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময়ে তা দেখতে পারবে। সেখানে নানা ধরনের কুইজের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীরা খেলার ছলে শিখতে পারবে।


মাধ্যমিকে টেলিভিশন ক্লাসে আজ যা থাকছে

ষষ্ঠ শ্রেণির গণিত বিষয়ের ক্লাস দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে ২টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত, সপ্তম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দুপুর ২টা ৫৫ মিনিট থেকে ৩টা ১৫ মিনিট, অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস ৩টা ১৫ মিনিট থেকে ৩টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত, নবম শ্রেণির জীববিজ্ঞান ক্লাস ৩টা ৩৫ মিনিট থেকে ৩টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত, দশম শ্রেণির গণিত বিষয়ের ক্লাস ৩টা ৫৫ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রচার করা হবে।

কারিগরি স্তরে নবম শ্রেণির জেনারেল ইলেকটনিক্স ক্লাস দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত, দুপুর ২টা ৫০ মিনিট থেকে ৩টা ১০ মিনিট পর্যন্ত দশম শ্রেণির পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং এবং ৩টা ১০ মিনিট থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দশম শ্রেণির মেশিন ট্যুলস অপারেশন ক্লাস সম্প্রচার করা হবে।

বাড়িতে সবজি ও ফল চাষের সহজ উপায়

সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো ‘নিরাপদ খাদ্য’। বিশেষ করে বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য অনেকটা বাঘের দুধের মতোই দুষ্প্রাপ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাল-ডাল, তরি-তরকারি, ফল-মূল, মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, তেল-ঘি, লবণ-মসলাসহ বাজারের কোন খাদ্যই এখন ভেজাল বা দূষণমুক্ত নয়। বিশ্বাস করা কঠিন হয়, যদি কেউ দাবি করে তার খাদ্যে কোন ভেজাল নেই বা সম্পূর্ণ নিরাপদ। নিরুপায় মানুষ জেনেশুনে এ সমস্ত ভেজাল, দূষণযুক্ত খাদ্য চড়া দামে কিনে খাচ্ছে। পরিণামে নানা জটিল আর জীবন সংশয়ী অসুখে ভুগছে লাখ লাখ মানুষ। ঘরে ঘরে এখন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনি ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী। শিশুরা জন্ম নিচ্ছে বিকলাঙ্গ, প্রতিবন্ধী, জটিল রোগ নিয়ে। এমনকি এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে। ভয়াবহ এক পরিস্থিতির মধ্যে জীবন কাটাচ্ছি আমরা এবং আরও ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। এখনই যদি আমরা সচেতন না হই এবং দেশের জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করি, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের করুণ পরিণতির জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই দায়ি থাকবো।

দেশের বেশিরভাগ মানুষ বিশেষত নারী ও শিশুরা নানা ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছেন। বর্তমানে চলমান করোনা মহামারী মোকাবিলায় অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপর। এ জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শাক-সবজি ও ফল-মূল খাওয়া জরুরি। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি ইঞ্চি জমি ফসল আবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামগ্রিক বিবেচনায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত বসতভিটাভিত্তিক নিবিড় সবজি ও ফল চাষের প্রযুক্তি দেশের জনগণের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য জোগানে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। গ্রাম ও মফস্বল অঞ্চলের প্রতিটি বসতবাড়িতে এই প্রযুক্তি বা মডেলের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, তবে খুব সহজেই দেশের ৫০-৬০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি জোগান দেওয়া সম্ভব।

দেশের জনগণের বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ খাদ্য এবং তাদের পুষ্টি নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অনেক আগে থেকেই গবেষণা চালিয়ে আসছে এবং বেশ কিছু কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। বারির সরেজমিন গবেষণা বিভাগের বিজ্ঞানীরা ৮০’র দশকে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার কালিকাপুরস্থ ফার্মিং সিস্টেম গবেষণা এলাকায় প্রথম উদ্ভাবন করেন বসতবাড়ির আঙিনায় নিবিড় সবজি চাষের প্রযুক্তি ‘কালিকাপুর মডেল’। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বসতভিটায় সারা বছরব্যাপী সবজি উৎপাদন করা সম্ভব হয় এবং উৎপাদিত সবজি দিয়ে পারিবারিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি উদ্বৃত্ত সবজি আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশিদের উপহার দেওয়া ও বিক্রি করে বেশ কিছু বাড়তি আয় করা সম্ভব হয়। বসতবাড়ির বাগানে জৈব সার (যেমন গোবর, খামারজাত আবর্জনা, রান্নাঘরের উচ্ছিষ্টাংশ ইত্যাদি) বেশি ব্যবহার করা হয় বিধায় রাসায়নিক সার কম লাগে। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বসতবাড়ির বাগানে রাসায়নিক কীট বা জীবাণুনাশক প্রয়োগ করা হয় না, তাই উৎপাদিত সবজি বিষমুক্ত এবং নিরাপদ। আর নিয়মিত বাগানের টাটকা সবজি খাওয়ার ফলে পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদা সহজেই পূরণ হয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।

প্রযুক্তিটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাধ্যমে প্রযুক্তিটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) প্রযুক্তিটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রসারণ করে। তবে কৃষি পরিবেশ, বসতবাড়ির আকার-আকৃতি ও ব্যবহারের ভিন্নতা এবং এলাকাভেদে কৃষকের পছন্দের তারতম্যের কারণে কালিকাপুর মডেলটি সর্বত্র ব্যবহারে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তাই পরবর্তীতে বারির সরেজমিন গবেষণা বিভাগের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে অবস্থিত ফার্মিং সিস্টেম গবেষণা এলাকায় নির্বাচিত কৃষকের বসতবাড়িতে গবেষণা চালিয়ে নিবিড় সবজি ও ফল চাষের আরও আধুনিক এবং অধিক উৎপাদনশীল কিছু মডেল উদ্ভাবন করেছেন। যেমন: পাবনা এলাকার জন্য ‘গয়েশপুর মডেল’, রংপুর এলাকার জন্য ‘রংপুর মডেল’, বরেন্দ্র এলাকার জন্য ‘বরেন্দ্র মডেল’, টাঙ্গাইল এলাকার জন্য ‘পালিমা মডেল’, সিলেট এলাকার জন্য ‘গোলাপগঞ্জ মডেল’, শেরপুর অঞ্চলের জন্য ‘কুসুমহাটি মডেল’, ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য ‘ঈশানগোপালপুর মডেল’, বৃহত্তর পটুয়াখালী ও বরিশাল এলাকার জন্য ‘লেবুখালী মডেল (অলবণাক্ত এলাকা) এবং কলাপাড়া মডেল (লবণাক্ত এলাকা)’, এবং নোয়াখালী এলাকার জন্য ‘আটকাপালিয়া মডেল’।

এ ক্ষেত্রে বসতবাড়ির সম্ভাব্য সব স্থানের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে যতটা বেশি সম্ভব সবজি (লালশাক, ডাঁটা শাক, পুঁই শাক, গীমা কলমি, পালং শাক, ধনিয়া শাক, কচু শাক ও কচু, টমেটো, বেগুন, মূলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, শিম, বরবটি, লাউ, করলা, চালকুমড়া, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়শ, আলু ইত্যাদি), মসলা (বিলাতি ধনিয়া, পিঁয়াজ, মরিচ, আদা ও হলুদ ইত্যাদি) এবং ফল (আম, পেয়ারা, লেবু, কুল, লিচু, পেঁপে, আনারস ইত্যাদি) উৎপাদনের চেষ্টা করা হয়েছে এবং চমৎকার ফলাফল পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ সবজি, মসলা ও ফলের ক্ষেত্রে বারি উদ্ভাবিত জাত ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকটি মডেলের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো-
মডেল অনুযায়ী বসতভিটার রৌদ্রযুক্ত স্থানে ৪-৫টি বেড তৈরি করে, বাগানের ও বাড়ির চারপাশের বেড়ায়, মাচায়, আংশিক ছায়াযুক্ত স্থান, ভেজা বা স্যাঁতস্যাতে স্থানে, ঘরের পেছনের পরিত্যাক্ত স্থানে, অফলা বা বনজ বৃক্ষে এবং ঘরের চালে নির্দিষ্ট ফসল বিন্যাস অনুসরণ করে বছরে ১২ থেকে ২৪ ধরনের সবজি ক্রমান্বয়ে উৎপাদন করা যায়। ফলে একটি কৃষক পরিবার সারা বছর ধরে সবজি কম-বেশি সংগ্রহ করে তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারে। এ ছাড়া উৎপাদিত মসলা ও ফল দিয়ে পরিবারের প্রয়োজন অনেকাংশে পূরণ করা যায়। গবেষণায় দেখা যায়, অংশগ্রহণকারী কৃষক পরিবারের সদস্যরা গবেষণা শুরুর আগে এলাকাভেদে প্রতিদিন মাথাপিছু ৬৮-১১০ গ্রাম সবজি গ্রহণ করতো (বয়সভেদে একজন ব্যক্তির দৈনিক ৮৮-২২০ গ্রাম সবজি গ্রহণ করা দরকার)। মডেল অনুযায়ী সবজি আবাদ করার পর তাদের সবজি গ্রহণের পরিমাণ দাঁড়ায় মডেল ও এলাকাভেদে প্রতিদিন মাথাপিছু গড়ে ৮৮-২৩৬ গ্রাম।

উল্লেখ্য, যে সমস্ত কৃষকের বসতবাড়িতে এই গবেষণা কাজ পরিচালনা করা হয়েছিল দু’তিন বছর পর তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, তারা কিছু শাক-সবজি আবাদ করলেও মডেলগুলো আর হুবহু অনুসরণ করছেন না। কারণ হিসেবে তারা জানান, গবেষণার মাধ্যমে বসতবাড়িতে সারা বছরব্যাপী সবজি চাষের যে মডেল উদ্ভাবন করা হয়েছে তা খুবই কার্যকর এবং উত্তম কিন্তু যথাসময়ে বীজ ও সারের জোগান না থাকায় তারা মডেলগুলো অনুসরণ করতে পারছেন না। কেউ কেউ আবার সময় এবং জনবলের অভাবের কথাও বলেছেন। এখানে উল্লেখ্য, বসতবাড়িতে এসব ফসল চাষে নারী ও শিশুরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তাই যথাসময়ে প্রয়োজনীয় বীজ বা চারা ও সার তাদের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া গেলে বসতবাড়িতে সবজি, মসলা ও ফল উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। গ্রামীণ বসতভিটাগুলোতে সুপরিকল্পিতভাবে শাক-সবজি, ফল-মূল ও মসলা উৎপাদন উৎসাহিত করার জন্য সরকার বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করতে পারেন অথবা প্রতি বছর সরকার কৃষি খাতে যে ভর্তুকি প্রদান করেন, তার কিছু অংশ দিয়ে যথাসময়ে কৃষকের দোরগোড়ায় মানসম্পন্ন বীজ ও সারের জোগান নিশ্চিত করা যেতে পারে (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবং এর তত্ত্বাবধানে সুপ্রতিষ্ঠিত এনজিও সমূহের মাধ্যমে)। বসতবাড়িতে শাক-সবজি, ফল-মূল ও মসলা ইত্যাদি উৎপাদনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বা কোন বেসরকারি সংস্থার প্রকল্প চলমান থাকলে সেখানে বারি উদ্ভাবিত প্রযুক্তি (এলাকা উপযোগী মডেল) অন্তর্ভুক্ত ও যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। আর কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা, মাঠকর্মী এবং বারির বিজ্ঞানীরা।


বিশ্বের দ্রুততম কম্পিউটার তৈরি করলো জাপান

চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে শীর্ষে চলে এলো জাপান। জাপানের রিকেন রিসার্স ইনস্টিটিউট এবং ফুজিৎসু লিমিটেড বিশ্বের দ্রুততম কম্পিউটার তৈরি করেছে। এই কম্পিউটার চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুততর কম্পিউটারগুলোর চেয়েও দ্রুত।

এক সমীক্ষার বরাত দিয়ে টেকগ্যাপ জানিয়েছে, জাপানের ফুগাকু নামের এই সুপার কম্পিউটারকে প্রথম স্থান দেওয়া হয়েছে। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনা সুপার কম্পিউটারগুলোর তুলনায় দ্রুততম বলে মনে করা হচ্ছে। এই কম্পিউটারে কম্প্যুটেশনাল সায়েন্সের রিকেন সেন্টারে ইনস্টল করা আছে।

এই সুপার কম্পিউটারটি ২০২১ সালের মধ্যে এর সব কার্যক্রম শুরু করবে। ড্রাগ পুনরুদ্ধার থেকে শুরু করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস, সমস্ত তথ্য দিতে পারে এই সুপার কম্পিউটারটি।

এই সুরক্ষা কম্পিউটারে দেড় লাখেরও বেশি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, এই কম্পিউটারের স্পিড, বিশ্বের অন্যান্য দ্রুত কম্পিউটারের তুলনায় ২.৮ গুণ বেশি।

সফ্টব্যাঙ্ক গ্রুপ কর্পোরেশন আর্মস লিমিটেডের টেকনোলজি ব্যবহার করে এই কম্পিউটারটি তৈরি করা হয়েছে। আর্মসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পারফরম্যান্সের নিরিখে এই কম্পিউটারটি ইন্টেল কর্পোরেশনের কম্পিউটারে টেক্কা দেবে। আর্ম প্রসেসরগুলো বিশ্বের বেশিরভাগ স্মার্টফোনে ব্যবহৃত হয়।

এদিকে অ্যাপল শিগগিরই তার ম্যাক কম্পিউটারগুলোতে এই প্রসেসর ব্যবহার করবে।


উল্লেখ্য, ৯ বছর পর চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পিছনে ফেলে জাপান প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এর আগে ২০১১ সালে ফুজিৎসু’র “কে” কম্পিউটার প্রথম স্থান অর্জন করে।

করোনাভাইরাস যেভাবে আপনাকে স্বার্থপর করে তুলতে পারে

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া মহামারী এখন বিশ্বজুড়ে। সংক্রমণটি সারা বিশ্বেই মানুষের জীবনকে এক বিশাল হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন বদলে দিয়ে অনেকটা কঠোর হতে বাধ্য করেছে বলা চলে। চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা দিনরাত চেষ্টা করছেন এর প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে। কিন্তু এখনও মেলেনি সমাধান। তাই নিজের প্রতি খেয়াল রাখা ও সচেতন থাকার বিকল্প নেই।

সামাজিক দূরত্ব, লকডাউন এবং কোয়ারেন্টাইন, ঘরে থেকে কাজ করা- এসব আমাদের আগের পৃথিবীকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। একান্তই জরুরি না হলে বাইরে বের হচ্ছেন না বেশিরভাগ মানুষ। ভবিষ্যত জীবনের সবকিছুই অনিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে, এবং এটি বিশ্বজুড়ে মানুষের মানসিক অবস্থাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। এমনটাই বলছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিকূলতার মাঝেও ইতিবাচক এবং আশাবাদী থাকার লড়াইয়ের ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মানসিকতায় একটি পরিবর্তন দেখা যায়।কারণ আমরা ধীরে ধীরে আমাদের প্রয়োজনকে প্রথমে রাখতে শুরু করি। অতএব, যদি আপনিও মনে করেন যে আপনি ধৈর্য ও সহানুভূতির খুব বেশি দেখাতে পারছেন না, তবে আপনি একা নন। আমাদের বেশিরভাগই এখন নানা দায়িত্ব, ঘরের কাজকর্ম নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।

হঠাৎ আসা তুমুল পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে গিয়ে আমরা সবাই এখন কম-বেশি ক্লান্ত। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে খুব কম লোকের শক্তি আছে অন্যদের কথাও ভাবার। প্রতিদিনের নানা নেতিবাচক খবর, চারদিক থেকে মানসিক নানা চাপে যথেষ্ট শক্তি বা মমতা না থাকলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।


মহামারী চলাকালীন আপনি যদি আরও স্বার্থপর বোধ করে থাকেন তবে এর ফলে আপনি প্রচুর চাপের মুখোমুখি হতে পারেন। অবিশ্বাস্যরকম স্ট্রেসাল পরিস্থিতিতে আমাদের দেহটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্লাইট-অর-ফাইট মোডে চলে যায়, যার ফলে দীর্ঘকালীন তীব্র মানসিক অবসন্নতা দেখা দেয়।

আমাদের বুঝতে হবে, যেহেতু আমরা সবাই কঠিন পরিস্থিতিতে বেঁচে আছি এবং প্রতিদিন অভিনব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি, তাই যদি আপনার প্রথম অগ্রাধিকার নিজের যত্ন নেওয়া হয় তবে এটি স্বার্থপরতা নয়। চাপ এবং উদ্বেগের মধ্যে ডুবে না থাকলেই কেবল অন্যকে সাহায্য করার কথা ভাবা সম্ভব। কিন্তু অন্যের জন্য কিছু করতে না পারার ব্যর্থতাও অনেককে হতাশায় ডোবায়। এজন্য প্রথম পদক্ষেপটি হলো নিজের যত্ন নেয়া। সময়মতো ঘুমানো, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট নিজের জন্য সময় বের করা প্রয়োজন।

আপনি সঠিকভাবে কাজ করার জন্য আপনার শরীর এবং মনকে সঠিক যোগান দিতে পারলে এরপর অন্যের জন্য চিন্তা করার সময় পাবেন। খুব বেশি চাপ নেবেন না, আপনার যতটুকু সামর্থ্য হয়, ঠিক ততটুকুই করুন। একটা ফোন কলে স্বজনদের খোঁজ নেয়াও কিন্তু এক ধরনের মানসিক সহায়তা। এভাবে ছোট ছোট সহায়তা আপনি করতেই পারেন। তাতে করে নিজেকে স্বার্থপর ভাবার নেতিবাচক মনোভাব দূর হবে।

যৌন হেনস্থার অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন জাস্টিন বিবার

খুব অল্প বয়সেই খ্যাতির চূঁড়া ছুঁয়ে ফেলেন মার্কিন পপ তারকা জাস্টিন বিবার। পেয়েছেন গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডও। আজ ছিলো ক্যারিয়ারের শুরুতেই ‘বেবী’ গান দিয়ে জনপ্রিয়তা পান এই তারকা। এরপর ‘সরি’ ও ‘হোয়াট ডু ইউ মিন’র মতো আরো অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন।

গান ছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘটনা দিয়েও আলোচনায় থাকেন এই গায়ক। অল্প বয়সেই জাস্টিন বিবার অগনিত মেয়ের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার তার মতই বিশ্বখ্যাত তারকা। সেলিনা গোমেজ এর নামটা এসে যায় সামনে। জাস্টিন বিবার ও সেলিনা গোমেজের প্রেম বিষয়ে সবার জানা।

এবার আর প্রেম নয়, যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে জনপ্রিয় গায়ক জাস্টিন বিবারের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছেন, ২০১৪ সালে জাস্টিন বিবার নাকি এক মহিলার যৌন হেনস্থা করেছেন। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয় শোরগোল।

জাস্টিন বিবার ওই মহিলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। সোশ্যাল হ্যান্ডেল টুইটারে একের পর এক পোস্ট দিয়ে করে ওই মহিলার সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

জাস্টিন বিবার জানান, অভিযোগ নিয়ে কখনও মুখ খুলতে চান না। কিন্তু যৌন হেনস্থার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। সেই কারণে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। শুধু তাই নয়, এই অভিযোগকে তিনি কোনওভাবেই হালকাভাবে নিচ্ছেন না। সেই কারণে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন বিবার।

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget