জুন 2020
91 অন্যান্য 51 অর্থনীতি 24 আইন ও আদালত 76 আন্তর্জাতিক 568 এক ঝলক 3 কক্সবাজার 1 কবিতা 22 কিশোরগঞ্জ 4 কুড়িগ্রাম 6 কুমিল্লা 1 কুষ্টিয়া 3 কৃষি 105 কৃষি ও প্রকৃতি 10 ক্রিকেট 1 খাগড়াছড়ি 73 খেলাধুলা 43 গণমাধ্যম 12 গাইবান্ধা 1 গাজীপুর 17 চট্টগ্রাম 5 চাঁদপুর 5 চাঁপাইনবাবগঞ্জ 2 চুয়াডাঙ্গা 14 জয়পুরহাট 1 জাতীয় 3 জামালপুর 1 জোকস 6 ঝনিাইদহ 246 ঝালকাঠি 12 ঝিনাইদহ 4 টাঙ্গাইল 44 ঠাকুরগাঁও 39 ঢাকা 1 থী 3 দিনাজপুর 4764 দেশজুড়ে 42 ধর্ম 3394 নওগাঁ 14 নাটোর 2 নারায়ণগঞ্জ 1 নিহত ২ 1 নীলফামারীর 2 নেত্রকোনা 1 নোয়াখালী 3 পঞ্চগড় 4 পিরোজপু 2 প্রকৃতি 2763 প্রথম পাতা 23 প্রবাস 1 ফরিদপুর 17 ফিচার 8 ফুটবল 1 ফেনী 94 বগুড়া 2 বলিউড 58 বাগমারা 82 বিএমএসএফ 31 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 52 বিনোদন 51 বেনাপোল 2 ব্রাক্ষণবাড়িয়া 1 ব্রাহ্মণবাড়িয়া 51 ভিডিও 18 ভোলা 8 ভ্রমণ 59 ময়মুনসিংহ 1 মাগুরা 1 মাদারীপু 2 মাদারীপুর 1 মানিকগঞ্জ 1 মেহেরপুর 495 যশোর 5 রংপুর 103 রাজনীতি 3 রাজবাড়ী 95 রাজশাহী 3 লক্ষ্মীপুর 24 লাইফস্টাইল 2 লালমনিরহা 41 শিক্ষা 1 শ্রীপুর 891 সকল জেলা 2 সাতক্ষীরা 9 সিরাজগঞ্জ 3 সিলেট 63 সুনামগঞ্জ 31 স্বাস্থ্য 4 হবিগঞ্জ 1 হলিউড 10 bmsf

নওগাঁয় এ্যাডভোকেট হিসাবে তালিকা ভুক্তির দাবীতে মানববন্ধন

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ২০১৭/২০২০ সালের প্রিলিমারী এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ন এ্যাডভোকেট হিসাবে দ্রুত তালিকা ভুক্তির দাবীতে নওগাঁয় মানববন্ধন পালন করা হয়। সকালে শহরের উকিলপাড়ায় জেলা প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে ২ ঘন্টাব্যাপী জেলার পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ন শিক্ষানবিশবৃন্দরা এই কর্মসুচী পালন করে।
জেলা কমিটির আহবায়ক শামীমুর রেজা রনির সভাপতিত্বে যুগ্ম আহবায়ক রানা হোসেন ও আতাউর রহমান বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েও এ্যাডভোকেট হিসাবে তালিকা ভুক্তি হতে পারি নাই। প্রতি বছর বার কাউন্সিল থেকে তালিকাভুক্তি দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হচ্ছে না। কেহ কেহ ৮/১০ বছর ধরেও পাশ করে বসে আছে তারা এ্যাডভোকেট হিসাবে তালিকা ভুক্তি হতে পারে নাই। দ্রুত এ্যাডভোকেট হিসাবে তালিকা ভুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

নওগাঁয় পিসিআর ল্যাব না থাকায় দ্রুত শনাক্ত হচ্ছে না রোগী, বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রামণ


নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: দেশের সীমান্তবর্তী বৃহত্তর জেলা নওগাঁয় প্রায় ৩০লাখ লোকের বসবাস। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে করোনা সংক্রমণে ইতোমধ্যে হটস্পটে পরিণত হয়েছে এই জেলা। প্রতিদিনই এই এখানে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সচেতন মহলের দাবি জেলায় করোনা পরীক্ষায় পিসিআর ল্যাব না থাকায় দ্রুত শনাক্ত করা যাচ্ছে না রোগী ফলে সংক্রামণের হার দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁয় রয়েছে ২৫০শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল আর ১৮সালে স্থাপন করা হয়েছে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে আধুনিক সদর হাসপাতালে সম্ভাব্য রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে প্রথম দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিন নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে ঢাকায় । এর ফলে রিপোর্ট আসতে সময় লাগছে ১০-১৫দিন। লক্ষণ বিহীন করোনায় আক্রান্ত রোগী নমুনা দিয়ে মনের অজান্তেই হরহামেশাই ঘুরে বেড়াচ্ছে আর নতুন করে সংক্রামিত করছে অন্যান্য ব্যক্তিদের। এদিকে নওগাঁয় প্রতিদিন প্রায় ৭০-৮০জনের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোন কোন দিন সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি। এছাড়া বেসরকারি ভাবে নওগাঁর আর কোথাও করোনা পরীক্ষার কেন্দ্র না থাকায় সদর হাসপাতালে এসে দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করে করোনা ভাইরাসের নমুনা দিতে হচ্ছে। আর ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দিনের পর দিন। জেলার ১১টি উপজেলার পাশাপাশি বগুড়া জেলার আদমদীঘি ও জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার অধিকাংশ মানুষই চলাচল করে নওগাঁয়। অন্যদিকে বগুড়া ও রাজশাহীতে করোনা পরীক্ষার কেন্দ্র থাকলেও সেগুলোতে পরীক্ষার অনেক চাপ থাকার কারণে নওগাঁর নমুনাগুলো স্বাস্থ্য বিভাগ ঢাকায় পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ নওগাঁয় যদি করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র থাকতো তাহলে মানুষ সহজেই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ফলাফল জানতে পারতো আর সঙ্গে সঙ্গেই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রতিরোধমূলক জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতো। এতে করে করোনা সংক্রামণ উল্লেখ্যযোগ হারে কমতো। অপরদিকে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে নওগাঁয় দ্রুত করোনা পরীক্ষার পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। নওগাঁর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদের পক্ষ থেকে করোনা সংক্রামণের প্রথম থেকেই নওগাঁয় একটি পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপনের জন্য মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।

সদর হাসপাতালে নমুনা দিতে আসা অনেক মানুষই জানান করোনা সংক্রামণ কমানোর জন্য পরীক্ষার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু হাসপাতালে এসে নমুনা দিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় ফলাফলের জন্য। যার কারণে এই করোনা ভাইরাস সংক্রামণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই নওগাঁয় করোনা পরীক্ষার ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপন করা অতি জরুরী।

নওগাঁ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদের সভাপতি এ্যাড. ডিএম আব্দুল বারী জানান করোনা সংক্রামণের প্রথম থেকেই আমরা নওগাঁয় একটি পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপনের জন্য শান্তিপূর্ন আন্দোলন চালিয়ে আসছি। করোনা নামক এই মরনঘাতি রোগ থেকে নওগাঁর আপামর মানুষকে বাঁচাতে হলে দ্রুত নওগাঁয় পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপনের কোন বিকল্প নেই।
নওগাঁর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মনজুর-এ-মুর্শেদ জানান নওগাঁয় পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপনের জোর চেস্টা চালানো হচ্ছে তবে করোনা রোগীর জন্য অক্সিজেন খুবই প্রয়োজনীয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নওগাঁয় কেন্দ্রীয় ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ কেন্দ্র স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছে। তবুও আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছি।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন মাননীয় খাদ্যমন্ত্রীর ডিও লেটারসহ আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নওগাঁয় দ্রুত পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপনের জন্য লিখিত ভাবে আবদেন করেছি। এছাড়াও এই বিষয়ে আমরা সরকারের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।

সরকার দ্রুত নওগাঁয় একটি পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ স্থাপন করে লাখো মানুষকে করোনা নামক মরনঘাতক ব্যাধির সংক্রামনের হাত থেকে ৩২লাখ মানুষকে রক্ষা করবেন এমনটিই আশা নওগাঁবাসীর।

মৃত্যুর ৮দিনপর করোনা শনাক্ত; নতুন শনাক্ত ৬৭ জন

সালমান ফার্সী (সজল), নওগাঁ : নওগাঁর আত্রাইয়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে মফিজ উদ্দিন (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ৮দিন পর করোনায় আক্রান্তের রিপোর্ট আসেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে দিনদিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় আরও নতুন করে ৬৭ ব্যক্তির শরীরে কোভিড-১৯ করোনায় শনাক্ত হয়েছে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৫১ জন আর মোট মৃত্যুর হয়েছে ৬ জনের।
সিভিল সার্জন ডা. আলাউদ্দিন আলাল জানান, আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মফিজ উদ্দিন করোনার উপসর্গ জ্বর ও পেটের সমস্যা নিয়ে ১৯ জুন আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এরপর করোনার সন্দেহ দেখা দেওয়ায় পরদিন ২০ জুন তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় জ্বর ও পেটের সমস্যা ভালো হয়ে যাওয়ায় পরদিন সকালে গ্রামের বাড়ি চলে যান। ২১জুন সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। গত রবিবার ২৮জুন রাতে আসা করোনার রিপোর্টে তিনি আক্রান্ত ছিলেন এমন রিপোর্ট হাতে আসে। ইত্যে মধ্যে মফিজ উদ্দিনের সংস্পর্ষে আসা সকল ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সিভিল সার্জন আরো বলেন, সরকারি নির্দেশণা মেনে চলতে অনুরোধ করেন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নতুন শনাক্তদের মধ্যে ৩ জন পুলিশ, ২ জন নার্স, ২ জন মেডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট এবং ১ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক রয়েছেন।
নওগাঁর ডেপুটি সিভিলসার্জন ডাঃ মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, রবিবার বিকেলে ও রাতে ঢাকার আইইডিসিইআর থেকে ২৩২টি নমুনার রিপোর্ট আসে। এতে নতুন করে ৬৭ ব্যক্তির শরীরে কোভিড-১৯ করোনায় শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় সদর উপজেলায় ২৬ জন, রাণীনগরে ১ জন, আত্রাইয়ে ৩ জন, মহাদেবপুরে ৯ জন, বদলগাছিতে ৮ জন, পতœীতলায় ২ জন, ধামইরহাটে ২ জন এবং পোরশায় ১৬ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় নতুন করে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে ২৪২ জনকে। এদের মধ্যে সদরে ৯১ জন, রাণীনগরে ৩ জন, মহাদেবপুরে ১৩ জন, মান্দায় ২১ জন, বদলগাছিতে ১৯ জন, পতœীতলায় ১৪ জন, ধামইরহাটে ২৭ জন, নিয়ামতপুরে ২ জন, সাপাহারে ৪১ জন এবং পোরশায় ১১জন। 
এই সময়ে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১৬০১ জন। এ সময় সুস্থ্য হয়েছেন ৯ জন এবং মোট সুস্থ্য হয়েছেন ২১৪ জন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মাটির নিচে পাওয়া গেল মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি

আজিজুল সঞ্চয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মাটির নিচ থোকে উদ্ধার করা হলো মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন। মঙ্গলবার (২৩ জুন) দুপুর একটার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের আমিনপাড়া এলাকার একটি মাজারের পাশ থেকে মরিচা ধরা একটি স্ট্যান গান, একটি পাইপগান ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের ধারণা, উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে আমিনপাড়া এলাকার করিম উদ্দীন শাহ্ (র.) মাজারের পূর্বপাশে একদল কাঠুরে গাছ কাটার জন্য মাটি খুঁড়তে থাকেন। কয়েক ফুট গভীর পর্যন্ত মাটি খোঁড়ার পর একটি পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় একটি স্ট্যানগান, একটি পাইপগান ও একটি ম্যাগজিন দেখতে পান। পরে কাঠুরেরা বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান রাজিব আহমেদকে জানালে তিনি থানায় খবর দেন। পরবর্তীতে সরাইল থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে এগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাজিব আহমেদ বলেন, আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ও অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে শুনেছি আমাদের এলাকার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়েছিল। কারণ যে জায়গা থেকে এগুলো উদ্ধার হয়েছে সেখানেও মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সেজন্য আমি এগুলো মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাখার দাবি জানাচ্ছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে এগুলো মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়েছিল। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশ্বনাথে জমি নিয়ে সংঘর্ষে দুই বৃদ্ধ নিহত : আহত ১৫

ছামির মাহমুদ : সিলেটের বিশ্বনাথে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে দু’পক্ষে দুই বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের আরও ১৫ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার মনোকুপা গ্রামের নুরুল ইসলাম ও ইউপি সদস্যের ভাই সমছু মিয়া পক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দু’জনের একজন হচ্ছেন মখলিছ আলী (৬৫)। তিনি উপজেলার মনোকুপা গ্রামের বাসিন্দা ও অলংকারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলু মিয়ার বড় ভাই। আর নিহত প্রতিপক্ষের অপরজন হচ্ছেন ওয়ারিছ আলী (৬০)। তিনি একই গ্রামের মৃত হারিছ আলীর ছেলে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পক্ষে আহতদের নাম জানা যায়নি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথের মনোকুপা গ্রামের নুরুল ইসলাম ও সমছু মিয়ার মধ্যে আত্মীয়তার সুবাদে দু’পক্ষের পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে গত রমজান মাসে দু’পক্ষের মধ্যে দুই দফায় সংঘর্ষও হয়েছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে বিরোধ নিস্পত্তির লক্ষ্যের পার্শবর্তী নিজ গ্রামের আব্দুল আজিজের বাড়িতে সালিশ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই আজ বিকেলে স্থানীয় বাজার থেকে আসার পথে নুরুল ইসলাম পক্ষের ওয়ারিছ আলীকে হামলা করেন প্রতিপক্ষের লোকেরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন হন।

গুরুতর আহত হন সমছু মিয়ার ভাই মখলিছ আলী (৬৫) ও প্রতিপেক্ষর ওয়ারিছ আলী (৬০)। মুমূর্ষু অবস্থায় মখলিছ আলীকে (৬৫) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর হামলায় আহত হওয়া প্রতিপক্ষের ওয়ারিছ আলী (৬০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে একই হাসপাতালে মারা যান।

স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে জায়গা-জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার রাতে সালিশ বৈঠকের কথা থাকলেও এর আগেই হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইপক্ষের দু’জন নিহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানার টিউটি অফিসার উপ-পরিচালক (এসআই) দেবাশীষ শর্ম্মা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওসিসহ সকলেই ব্যস্ত। আর ঘটনার খবর পাওয়ার পরপর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

 

হত্যার একদিন পরও বাংলাদেশির লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গোবড়াকুড়া সীমান্তের দুইশ গজ ভেতরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) ভোরে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা যান।

উপজেলার সীমান্তবর্তী গোবড়াকুড়া এলাকার খলিল নামে এক ব্যক্তি জানান, আব্দুল জলিল (২৬) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন তার এক ছোটভাই নিখোঁজ রয়েছেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। লাশটি তার ভাইয়ের হতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিএসএফ নিহত ব্যক্তির ছবি পাঠিয়েছে। ছবি দেখে স্বজনরা তাকে জলিল বলে শনাক্ত করেছেন।

কড়ইতলী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল মজিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার ভোরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি ব্যক্তি মারা যান।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশের গোবড়াকুড়া সীমান্তে দু’দেশের সীমান্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তখন বিএসএফ বলেছে ওইদিন কিছু বাংলাদেশি রাতে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। বিএসএফ চ্যালেঞ্জ করলে তারা বিএসএফের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে বিএসএফ গুলি করে। তবে ওই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ।

তিনি আরও বলেন, আমরা এখনো লাশ দেখতে পারিনি। লাশ হস্তান্তর করলেই সম্পূর্ণ পরিচয় জানতে পারব। বিএসএফ জানিয়েছে ময়নাতদন্ত সম্পন্নের পর আজ যেকোনো সময় বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ হস্তান্তর করা হবে।

 বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে প্রাণ গেল নানি-নাতনির

আরিফ উর রহমান : টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নানি-নাতনি নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে ঢাকা-বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের এলেঙ্গা রিসোর্টের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ি উপজেলার গোবিন্দচর গ্রামের মৃত আব্দুল হালিমের স্ত্রী উমেছা বেগম (৬০) ও একই গ্রামের তোফায়েল আহমেদের স্ত্রী মরিয়ম আক্তর (২০)। নিহতরা সম্পর্কে নানি-নাতনি।
এ ঘটনায় অটোরিকশা চালকসহ দুইজন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মরদেহ একই হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামাল হোসেন জানান, দুপুরে মধুপুর-ধনবাড়ীগামী বিনিময় পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে টাঙ্গাইলগামী একটি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশার যাত্রী নানি-নাতনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ ঘটনায় অটোরিকশা চালকসহ দুইজন গুরুতর হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘাতক বাসটিকে আটক করতে পারলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন।

 পাথরবোঝাই ট্রাকে ইটবোঝাই ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

ইউসুফ দেওয়ান রাজু: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পাথরবোঝাই একটি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ইটবোঝাই ট্রাকের দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুইজন। বুধবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের উপজেলার পাঁচলিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- সলঙ্গা থানার রঘুনাথপুর গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে কায়সার (২০) ও একই গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে ছানোয়ার হোসেন (১৯)। আহতরা হলেন- একই এলাকার ইয়াকুব ও সানোয়ার। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরন্নবী প্রধান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সকালে উপজেলার পাঁচলিয়া এলাকায় চলন্ত পাথরবোঝাই একটি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ইটবোঝাই আরেকটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই ইটবোঝাই ট্রাকে থাকা দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও দুই শ্রমিক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক দুটিকে জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন।

 নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স

রেজাউল করিম রেজা : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে চালকসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। বুধবার সকালে উপজেলার স্যান্নাল পাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, মৃতের চাচা মাসুদ (৪০), ভাই সুমন (১৭), মা রত্না বেওয়া (৫৫), শ্বাশুড়ি লিলি বেগম (৫০) ও শ্যালক হান্নান (৩২)। এছাড়া চালক সোহাগ (৩৫) ও হেলপার মিলন (১৮)।

আহতদের স্বজনরা জানান, বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড় দিয়াড় ইউনিয়নের নতুন কলাবাড়িয়া গ্রামের মৃত সাদেক আলীর ছেলে আতিয়ার রহমান অসুস্থ হয়ে চার দিন আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আতিয়ার রহমান মারা যান। বুধবার সকালে রাজশাহীর একটি লাশবাহী প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সে মৃতের স্বজনরাসহ মরদেহ বাগাতিপাড়ায় আনা হচ্ছিল। বাড়ি থেকে কিছুদূরে উপজেলার স্যান্নালপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ভাঙা সড়কে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। এ সময় যাত্রীসহ অ্যাম্বুলেন্সটি উল্টে রাস্তার পাশের একটি পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। এতে ৭ জন আহত হন। আহতদেরকে বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দয়ারামপুরের স্থানীয় ক্লিনিক এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া থানার ওসি নাজমুল হক জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছিল। আহতদের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।

বগুড়ার ইউপি সদস্যের প্রাণ গেল ট্রেনের ধাক্কায়

বগুড়ার কাহালুতে ট্রেনের ধাক্কায় হিরন চন্দ্র সাহা (৬৮) নামে এক ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৪ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে কাহালু পৌরসভার পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত হিরন চন্দ্র কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের সাতরোকা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পর পর সাতবার মালঞ্চা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

কাহালু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, হিরন চন্দ্র রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

 করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে তানোরের ইউএনও

ফেরদৌস সিদ্দিকী : প্রাণঘাতী করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রাজশাহীর তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো। বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রোজিয়ারা খাতুন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ইউএনও প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বিশেষ একটি কক্ষে চিকিৎসা নিচ্ছেন। করোনার উপসর্গ থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা পরীক্ষার ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইউএনওর স্ত্রী ও সন্তানও জ্বরে ভুগছেন। ফলে তার পরিবারের সদস্যসহ ইউএনও অফিসের স্টাফদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে। টেস্টের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

জয়পুরহাটে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৯ মামলার আসামি নিহত

রাশেদুজ্জামান: জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রবিউল ইসলাম মিন্টু (৪০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৪ জুন) ভোররাতে উপজেলার রতনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় দুই র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি শুটার গান, ৮ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগজিন, এক হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও ৫০২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

নিহত মিন্টু জয়পুরহাটের উত্তর গোপালপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।

র‌্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মোহাইমেনুর রশিদ জানান, মাদকবিরোধী অভিযান চলকালে ভোররাতে উপজেলার রতনপুর এলাকায় র‌্যাব সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় মাদক ব্যবসায়ীরা। র‌্যাবের পাল্টা গুলি বর্ষণে অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলেও মিন্টু গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

নিহত মিন্টুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, চোরাচালান, অপহরণ, বিজিবি ও পুলিশের ওপর হামলাসহ ১৯টি মামলা রয়েছে বলেও জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধসহ স্বামী-স্ত্রী আটক

রবিউল: লালমনিরহাটে বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ ও ১৭৫টি ওজন পরিমাপক যন্ত্রসহ এক দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ জুন) বিকেলে লালমনিরহাট পৌরসভার ড্রাইভারপাড়া এলাকার নিজ ভাড়া বাসা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আটকরা হলেন- গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধামাইটারী গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়া (৪০) ও তার স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন (৩৫)। তারা লালমনিরহাট শহরের ড্রাইভারপাড়া রেলওয়ের কোয়ার্টার ভাড়া নিয়ে পান ও ওষুধ বিক্রি করতেন।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে লালমনিরহাট শহরের ড্রাইভারপাড়া রেলওয়ের কোয়ার্টার ভাড়া নিয়ে পান ও ওষুধ বিক্রি করেন আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়া। পান ও ওষুধের দোকানের আড়ালে সরকারি হাসপাতালের ওষুধসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বাড়িতে রেখেও তিনি বিক্রি করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সদর থানা পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৭৫টি ওজন পরিমাপক যন্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের সরকারি ওষুধ জব্দ করে। এর সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে রাজ্জাক ও তার স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিনকে আটক করা হয়। জব্দকৃত ওষুধের সিজার লিস্টসহ মূল্য নির্ধারণ করে সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধ মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আটকরা ৬-৭ বছর ধরে সরকারি ওষুধ বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন। এসব ওষুধ জেলার সকল হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য বরাদ্দকৃত বলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন।

লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বের করে আইনের আওতায় এনে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


ঈদ সামনে রেখে চরম দুঃশ্চিন্তায় নওগাঁর প্রান্তিক গো-খামারিরা

সালমান ফার্সী, সজল (নওগাঁ) : করোনা পরিস্থিতিতে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে নওগাঁর প্রান্তিক গো-খামারিরা চরম দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। খামারিরা বলছেন, একদিকে গো-খাদ্যের চড়া দাম, অন্যদিকে গরুর হাটে বেচাকেনা বন্ধ। এতে বড় ধরণের লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গরুর হাট চালুর দাবি জানিয়েছেন জেলার খামার মালিক সমিতির সভাপতি। অবশ্য করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সরকারি প্রণোদনার আওতায় আনতে তালিকা করা হচ্ছে বলে জানায় প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
কোরবানির ঈদকে টার্গেট করে ৫টি ষাড় কিনে ছোট একটি খামার গড়েছেন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডিপুর এলাকার কামরুন্নাহার। ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় কেনা এসব গরু লাভের আশায় পালন করলেও, করোনা পরিস্থিতির কারণে দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে কামরুন্নাহারের।

কামরুন্নাহার জানান, বড় আশা করে গরুগুলো বড় করেছি, এখন লাভ হবে কি হবে না চিন্তার মধ্যে আছি। দু’একজন গরু কিনতে আসছে কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছে না। 

শুধু কামরুন্নাহারই নন, এলাকার মান্নান, রেশমা ও মামুনের মতো প্রান্তিক গো খামারিরাদের একই অবস্থা। একদিকে গো-খাদ্যের চড়া দাম তার উপর করোনার মন্দা বাজার।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গরুর হাট চালুসহ সরকারি সহযোগিতা দেয়ার আহবান জানান খামার মালিক সমিতির নেতা।

নওগাঁর রাণীনগরে বিলের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু


সুকুমল কুমার প্রামানিক: নওগাঁর রাণীনগরে বিলের পানিতে ডুবে মরিয়ম আক্তার (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার হাতিরপুল ব্রিজ নামক স্থানের হঠাৎপাড়া গ্রামে এ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। শিশু মরিয়ম আক্তার হটাৎপাড়া গ্রামের বাবু মিয়ার মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল অনুমান সাড়ে ৮টায় শিশু মরিয়ম আক্তার বাড়ির পাশের্^ বিলের পানি থেকে হাঁস তুলতে নামে। এ সময় অসাবধানতা বসত পানিতে ডুবে যায় সে। পরে স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে রাণীনগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মরিয়মকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাণীনগর থানার ওসি মো. জহুরুল হক বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ করেনি।

নওগাঁয় ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে ইভটিজিং ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

কাজী কামাল হোসেন: নওগাঁর মান্দা উপজেলার মৈনম মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং ও  শারীরিক নির্যাতনকারী অফিস সহকারী শাহিনুর ইসলাম সনির অপসারণ ও বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় মৈনম এলাকাবাসী। বুধবার দুপুরে স্থানীয় মৈনম সচেতন এলাকাবাসীর আয়োজনে মৈনম মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সমাজসেবক আবুল কালাম আজাদ। বক্তব্য রাখেন ফেরদৌস হোসেন, রুহুল আমিন, প্রাননাথ সরকার, আশরাফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমূখ। বক্তারা মানববন্ধনে বলেন বিদ্যালয়ের এমন কর্মচারীর এই সব কর্মকান্ড দ্বারা এই এলাকার অনেক অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় আছে। মেয়েদের বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করানো নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি। অবিলম্বে বিদ্যালয়ের এই অফিস সহকারী শাহিনুর ইসলামের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি এবং অপসারণের দাবি জানাই। তা না হলে পরবর্তিতে রাজপথে নেমে বৃহৎ আন্দোলন করার হুশিয়ারী প্রদান করেন মানববন্ধনে অংশকারী বক্তরা।

মহামারি শেষ হলে সৌদি যেতে পারবেন ছুটিতে থাকা প্রবাসীরা
 
সৌদি আরবের বাইরে থাকা প্রবাসীদের পুনরায় দেশটিতে প্রবেশ করার প্রক্রিয়া করোনভাইরাস মহামারি সংকট শেষ হওয়ার পরে শুরু হবে বলে জানিয়েছে দেশটির পাসপোর্ট অধিদফতর জেনারেল (জাওয়াজাত)।

মঙ্গলবার জাওয়াজাতের এক টুইটার বার্তার বরাত দিয়ে দেশটির ইংরেজি দৈনিক সৌদি গেজেট এ সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশ করে। খবরে বলা হয়, বর্তমানে সৌদির বাইরে রয়েছে এবং যাদের এক্সিট রি-এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, এমন একাধিক প্রবাসীর প্রশ্নের জবাবে জাওয়াজাত (পাসপোর্ট অধিদফতর) এ কথাগুলো বলেছে।

জাওয়াজাত পুনঃপ্রকাশ করার মাধ্যমে ঘোষণা করেছে যে, সৌদি আরব ছেড়ে যাওয়া প্রবাসীদের ফিরে আসার বিষয়টি মহামারিটি শেষ হওয়ার পরে এবং বৈধ পুনঃপ্রবেশ ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া অনুসারে হবে।

জাওয়াজাত আরও জানায় যে, এ বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, জাওয়াজাত আগে থেকে নিশ্চিত করেছিল যে, এ সম্পর্কিত পরিষেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আবশার অ্যাপ এবং মুকিম অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে অব্যাহত রয়েছে।


সব কাজ মধ্যমপন্থায় করতে যা বলেছেন বিশ্বনবি
প্রত্যেক কাজেই মধ্যম পন্থা অবলম্বন করার গুরুত্ব ইসলামে অনেক বেশি। যে কোনা কাজে বাড়াবাড়ি কিংবা ছাড়াছাড়ি ইসলামে কোনো স্থান নেই। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব কাজে মধ্যমপন্থা বজায় রাখার উপর জোর তাগিদ দিয়েছেন।

শারীরিক পরিশ্রমে, মস্তিষ্কের পরিচালনায়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে, পানাহারে, ঘুম ও বিশ্রামে, দুঃখ-কষ্টে, হাসি-খুশিতে, আনন্দ-উল্লাসে ও ইবাদত-বন্দেগিতে, চলাফেরা ও কথা-বার্তাসহ সার্বিক দিক থেকেই বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি না করে মধ্যমপন্থা বজায় রেখে কাজ করাই হাদিসের নির্দেশনা এবং মুমিনের অন্যতম গুণ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও সব কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতেন। তিনি উম্মতে মুহাম্মাদিকেও মধ্যমপন্থা বজায় রেখে এভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'সচ্ছল অবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা কতইনা সুন্দর! দারিদ্র্যের সময় মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা কতইনা ভালো! ইবাদত-বন্দেগিতে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা কতইনা উত্তম!' (মুসনাদে বাযযার, কানজুল উম্মাল)

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কত সুন্দর হেকমতপূর্ণ ভাষায় সংক্ষেপে উম্মতে মুহাম্মাদিকে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের নসিহত পেশ করেছেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত দুনিয়ার যাবতীয় কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। চাই তা ইবাদত- বন্দেগি হোক কিংবা দুনিয়ার জীবনের সংসার ধর্মের কাজ হোক কিংবা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের কাজ হোক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে হাদিসের নির্দেশনা মেনে আমল-ইবাদতসহ সব কাজ করার তাওফিক দান করুন। উত্তম জীবন-যাপন ও ইবাদত-বন্দেগিতে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সকল আদালত খুলে দেয়ার দাবি

অবিলম্বে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টসহ সকল আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম (কোর্ট) শুরুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সুপ্রিমকোর্টের কয়েকজন আইনজীবী। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাধারণ আইনজীবী পরিষদের ব্যানারে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমতাজউদ্দিন আহমদ মেহেদীর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকজন আইনজীবী এ মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নেন।

এর আগে গত ২১ জুন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশের ৬০ হাজার আইনজীবীর জীবন-জীবিকার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সকল আদালতের নিয়মিত কোর্ট চালু করে দিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন আইনজীবী মেহেদী।

আবেদনে বলা হয়েছিল, গত ১৩ মার্চ থেকে সুপ্রিম কোর্ট এবং ২৬ মার্চ থেকে দেশের সকল আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিগত তিন মাস আইনজীবীরা নিয়মিত কোর্ট করতে না পারায় অধিকাংশ আইনজীবী চরম অর্থ সংকটে পড়েছেন এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। ইতোমধ্যে সরকার ভার্চুয়াল বিচার ব্যবস্থা চালু করেছে। বাংলাদেশের ৯৫% আইনজীবীর প্রশিক্ষণ না থাকায় ও ইন্টারনেট সুবিধার অভাবে ভার্চুয়াল কোর্টে মামলা করতে পারছেন না। অধিকাংশ আইনজীবীর সঞ্চিত টাকা নেই। করোনা একটি দীর্ঘ মেয়াদি বৈশ্বিক সমস্যা। কোভিড- ১৯ কতদিন স্থায়ী হবে তা কেউই জানে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের মতে মানব জাতিকে দীর্ঘদিন ধরে করোনা মোকাবিলা করেই টিকে থাকতে হবে। প্রয়োজন সচেতনতা ও সাবধানতা। জীবন তো আর থেমে থাকতে পারে না এবং জীবিকা ছাড়া জীবন অচল।

গাছ দিয়ে তৈরি করা হলো গাছবাড়ি

বনের মধ্যে হাতির পাল। মানুষ দেখে পালিয়ে যায় ময়ূর। শাল-পলাশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ঢেউ খেলানো লালমাটিতে বিছিয়ে আছে শুকনো পাতা। যেদিন আকাশে চাঁদ ওঠে, পুরো অঞ্চল ভেসে যায় জ্যোৎস্নায়। এমনই এক জায়গার নাম পুরুলিয়ার মাঠাবুরু। সেখানে গড়ে উঠেছে গাছবাড়ি পর্যটন কেন্দ্র।

জানা যায়, ভারতের বরাভূম স্টেশন থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে ‘কোকুবুরু’ আর ‘মাঠাবুরু’ নামে দুটি পাহাড়। বন-পাহাড়ি পথে নেমে যেতে হবে গাড়ি থেকে। বনের ভেতর দিয়ে সামান্য এগোতেই চোখে পড়বে ‘টংবাড়ি’। গাছবাড়ির এমনই নাম এখানে। বাড়িগুলো সব গাছের উপর। তাই হয়তো এমন নাম।

২০১৬ সালে কলকাতার বরুণ ভট্টাচার্য ও গোবিন্দপুরের সুজিত কুমার বানজারা ক্যাম্পে এসে গাছবাড়ির পরিকল্পনা করেন। এ পরিকল্পনা সম্পর্কে বরুণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘স্থানীয় আদিবাসীদের থেকেই নামটি শেখা। গাছের মাথায় মাচা বেঁধে, সেখান থেকেই ফসল পাহারা দেন তারা। হাতি বা বুনো শুয়োর ঢুকলে ক্যানেস্তারা বাজান। রাতের পর রাত সেই মাচাতেই কাটান। আদিবাসীরা এ মাচাকে বলেন ‘টংবাড়ি’।

পর্যটকরা জানান, গাছবাড়ির আকর্ষণ হলো গা-ছমছমে অ্যাডভেঞ্চার। রাতের বেলা বন্য পরিবেশে গাছবাড়িতে রাত কাটানো মানে আজীবনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে নেওয়া। এখানে অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ অনেক। বন, পাহাড়—সবই এখানে উজাড় করে সাজিয়ে রেখেছে প্রকৃতি।

স্থানীয়রা জানান, মায়ানমারের গাছবাড়ির আদলে বাড়িগুলো তৈরি হয়েছে গাছের ক্ষতি না করেই। ঘরগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। তবে ভোরে পাখির ডাকে ঘুম ভাঙার সুযোগ রয়েছে। জানালা খুলতেই শীতের হাড়কাঁপানো হাওয়া আর মিষ্টি রোদ স্বাগত জানাবে। শহুরে দূষণ থেকে অনেক দূরে এক টুকরো অবসর যেন গাছবাড়ি।

টংবাড়ি ছাড়াও তাঁবুতে রাত কাটানোর সুযোগ রয়েছে। তাঁবুর ভেতরেই আছে এয়ারকুলার, রেফ্রিজারেটর, ফোল্ডিং চেয়ার ও হেডল্যাম্প। এর সঙ্গে ক্যাম্পের ভেতরেই মিলবে বার্মা ব্রিজ, নেট ক্লাইম্বিংয়ের সুযোগ। চাইলে শিখে নিতে পারেন রক ক্লাইম্বিং বা র্যা পেলিং। বন্য পথ ধরে বেরিয়ে পড়তে পারবেন সাইকেলে।

কখনো পাতা-নাচের আসর বসে ক্যাম্পের ভেতরেই। খাওয়া-দাওয়া একসঙ্গেই। তারপর কেউ উঠে পড়বেন টংবাড়ির মাথায়, কেউ থাকবেন তাঁবুতে। এ ছাড়া গাছে ঝোলানো দড়ির বিছানা বা খাটিয়ায় শুয়েও কাটিয়ে দিতে পারেন রাত। তবে, বেশি রাতে ক্যাম্পের বাইরে যাওয়া যাবে না। বন্য জন্তুর ভয়ও কিন্তু কম নয়।
পুরুলিয়ার মাঠাবুরু পাহাড়ে বরুণের গাছবাড়িতে গ্রীষ্মকাল ছাড়া যেকোনো সময় যাওয়া যায়। তবে বসন্তকাল অবশ্যই সেরা সময়।

করোনা সংকটে চট্টগ্রামের পাশে এ জনপদের সন্তানেরা

আবু আজাদ: দেশে গত মার্চে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শুরুর পর মে মাসে চট্টগ্রামের পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে শুরু করে। জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করে প্রতিদিনই। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্লোগান ওঠে— ‘শ্বাস নিতে চায় চট্টগ্রাম’। সেই স্লোগান ছুঁয়ে যায় সাত সাগর আর তেরো নদীর ওপারে থাকা এ মাটির সন্তানদেরও। তাই তো দেশের মানুষকে রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাষ্ট্র থেকেও সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন তারা। চট্টগ্রামের জন্য ‘অক্সিজেন’ জোগান দিতে বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন এ জনপদের সন্তানরা।

সম্প্রতি ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অব নর্থ আমেরিকা’র সাবেক সভাপতি ডা. বি এম আতিকুজ্জামানের ডাকে সাড়া দিয়ে এক অনলাইন বৈঠকে নিজেদের চলমান কার্যক্রম ও পরিকল্পনার এসব বিষয়ে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও অ্যালামনাইয়ের সদস্যরা। চলমান করোনাভাইরাস মহামারিতে চট্টগ্রামের মানুষের প্রয়োজনীয়তা জানতে ও তাদের পাশে দাঁড়াতে পরামর্শমূলক এ ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

বি এম আতিকুজ্জামানের সঞ্চালনায় বৈঠকে অংশ নেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শামীম হাসান, আমেরিকায় বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জিয়া করিম ও অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু আজাদ।

বৈঠকে ডা. বি এম আতিকুজ্জামান বলেন, এই মুহূর্তে দেশে করোনার একটি হটস্পট চট্টগ্রাম। সেখানে এ পর্যায়ে সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনের খবরই আমরা চট্টগ্রামের দুরবস্থার বিষয়ে শুনছি। এ অবস্থায় ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অব নর্থ আমেরিকা’ অতি সম্প্রতি চট্টগ্রামের জন্য অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, এইচএফএনসি, ন্যাজাল ক্যানোলা, পালস অক্সিমিটার পাঠানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথম চালান পৌঁছে যাবে শিগগিরই। আমাদের লক্ষ্য কম করে হলেও একশ কনসেনট্রেটর। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অস্ট্রেলিয়া অ্যালামনাই এগিয়ে এসেছে। এছাড়া আমেরিকা থেকে ডা. শাহিন, ডা. জিয়া করিম, ডা. পারভেজ, ডা. মিশকাত এ লক্ষ্যে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই অব নর্থ আমেরিকাও তার কাজ শুরু করেছে।

এ সময় চট্টগ্রামের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরেন অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু আজাদ। তিনি জানান, গত ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষা শুরুর পর ৩ এপ্রিল প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর পরের ৪০ দিনে চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১০৫ জন। কিন্তু পরের ৪৬ দিনে সে সংখ্যা বেড়েছে ছয় হাজারের বেশি। এছাড়া করোনা পরীক্ষা ছাড়াই অনেক রোগী মারা যাচ্ছে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে। নগরে মরদেহ দাফন ও দাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাবে করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর তারা প্রায় ৬০০ মানুষের মরদেহ দাফন বা দাহ করেছেন। অথচ সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবে সেদিন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা মাত্র ১৩০!

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শামীম হাসান বলেন, আমি সম্মানিত বোধ করছি আমাকে এখানে ডাকার জন্য। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছেন অ্যালামনাই ও আমাদের সোনার সন্তানরা। তাদের মন আমাদের জন্য কাঁদে। তারা আমাদের জন্য চিন্তা করেন। বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে আমরা এটা উপলব্ধি করতে পেরেছি। তাদের এই ভালোবাসা বুকে ধারণ করে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমি সুচারুভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি।


করোনায় চমেক হাসপাতালের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সুদক্ষ পরিচালক রয়েছেন। তার অধীনে চিকিৎসকরা সেবা দিয়ে থাকেন। করোনা সংক্রমণ শুরুর আগে আমাদের ৪৪টি ডিসিপ্লিনে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছিলাম। যখন করোনা সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করলো তখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিট তৈরি না করে আর থাকতে পারিনি। আপনারা জানেন যে, কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে শুরু করে, ফেনী, কুমিল্লা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার রোগী, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার কোটি মানুষ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা নিয়ে থাকেন। তাদের সুরক্ষার জন্য চমেকে আমরা প্রথমে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া নিয়ে সতর্ক ছিলাম। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট করা হয়। পরে আরও একটি ওয়ার্ড নিয়ে ১৫০ শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে প্রায় ২০০ রোগী থাকে ফ্লোরিংসহ। আরও একটি ওয়ার্ড করোনা রোগীদের দেয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

অধ্যক্ষ শামীম হাসান বলেন, আমরা পর্যালোচনা করে দেখতে পাই, এর ব্যবস্থাপনার জন্য যা যা লাগে, প্রথমে রোগ শনাক্তকরণ, পরে তার সাপোর্ট। সাপোর্টে আমরা সিমটমেটিক ট্রিটমেন্টগুলো দিয়ে থাকি। সাথে তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। আমাদের পোর্টেবল এক্সরে আছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি আলাদা অক্সিজেন প্ল্যান্ট রয়েছে। সে প্ল্যান্টের মাধ্যমে আমরা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেছি।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরুর পর আমরা যখন প্র্যাকটিক্যালি মাঠে নামলাম তখন দেখলাম এ সমস্ত রোগীর অক্সিজেন সার্কুলেশন কমে যায়। অক্সিজেন গ্রহণ করার এক ধরনের প্রক্রিয়া, সেখানে ফুসফুসে এক ধরনের সমস্যা হয়। সে কারণে একটি বিশেষ ব্যবস্থায় তাকে অনেক বেশি পরিমাণ অক্সিজেন (প্রতি মিনিটে ৩০ থেকে ৬০ লিটার) দিতে হয়।’

হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা বাঁচাতে পারে হাজার জীবন
শামীম হাসান বলেন, ঈদের দিন রুমী নামে একজন ডাক্তার মারা যান। তিনি মা ও শিশু হাসপাতালে কাজ করতেন। সেখানে তার একটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ছিল। ওই ক্যানোলাসহ তাকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ডা. রুমী মারা যাওয়ার পর অর্থোপেডিক্সের একজন ডা. সহযোগী অধ্যাপক ছমিরুল তখন অসুস্থ, একদম খুব খারাপ অবস্থায় পড়েছিল। পরে রুমীর সেই হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে তোলা হয়। সে সময় যদি রুমীর হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা না পেতাম তাহলে ডা. ছমিরুলকেও বাঁচানো সম্ভব ছিল না।

তিনি বলেন, তখন আমাদের টনক নড়লো, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা জিনিসটা কী, তখন থেকে এটা নিয়ে আমরা মাথা ঘামালাম। দেখলাম যে আমাদের দেশে তিন থেকে সাত লাখ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা ডাক্তাররাই চিন্তা করলাম প্রতিজনে ২০-৩০ হাজার টাকা দিয়ে ৭০ লাখ টাকার মত হয়, এটা নিয়ে আমরা কেনার পরিকল্পনা করলাম। কিন্তু সচিব মহোদয় বললেন, তোমরা সরকারের ওপর ডিপেন্ড না করে নিজেরা কিনছো, এটা খারাপ দেখাবে। তাই আমরা এটা বাদ দিলাম। পরে বাজার যাচাই করতে গিয়ে দেখলাম তিন লাখ, পাঁচ লাখ, সাত লাখ টাকার জিনিস ১৫ লাখ টাকা হয়ে গেলো।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শামীম হাসান বলেন, নিজেরাই হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা কেনার পরিকল্পনা যখন বাতিল হয়ে গেলো, সে সময় অস্ট্রেলিয়া থেকে চমেক ৩৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আমাদের চারটা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা পাঠাবে বলেছিলেন। তাতে আমরা কিছুটা আশ্বস্ত হলাম। এরই মধ্যে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্ররা এগিয়ে এলেন, তারা আমাদের পোর্টেবল ভেন্টিলেটর দেয়ার কথা বললেন। পোর্টেবল ভেন্টিলেটরের দাম প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা। আমরা এটি নিয়ে স্টাডি করলাম, এটি দিয়ে অক্সিজেন ফ্লো দেয়া যায়। এখন আমরা ১০টি পোর্টেবল ভেন্টিলেটর পেয়েছি। ঢাকা থেকে চারটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা এসেছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আরেকজন ১০টি পাঠাচ্ছেন। সর্বশেষ জিয়া করিম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তিনি আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আমাদের কী লাগবে? তখন আমরা একটি মিটিং করলাম। মিটিং করে যে সমস্ত যন্ত্রপাতি তার একটি লিস্ট করলাম, সে লিস্ট জিয়া করিমকে পাঠানো হয়েছে। জিয়া করিম স্থানীয় একটি গ্রুপের মাধ্যমে জিনিসগুলো কিনে আমাদের অনুদান হিসেবে দিচ্ছেন। আমি সৌভাগ্যবান যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ হিসেবে সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চমেকের সাবেক ছাত্ররা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তারা আমাদের সাহায্য করতে চাচ্ছেন, যেন আমরা সুস্থ থাকি। নিজেরা সুস্থ থেকে জনগণের সেবা করতে পারি।

ডা. জিয়া করিম বলেন, আমরা যখন দেখলাম চট্টগ্রামের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করলো, তখন একটি মিটিং করলাম, মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত ছিল আমরা কিছু টাকা তুলবো, টাকা তুলে কীভাবে কোভিড-১৯ সিচুয়েশনে চমেককে সহায়তা করা যায়। তখন একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হলো। আমরা ডা. মিজান, ডা. শামীম ও ডা. কাজলের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করছি। পুরোদমে টাকা তোলা শুরু করি, আমাদের বাজেট ছিলো হান্ড্রেড থাউজেন্ড ডলার। ওই টাকা আমাদের জোগাড় হয়ে গেছে। এখন আমরা আশা করছি এটা আমরা আরও একটু বাড়াতে পারবো। লোকজন সাহায্য করতে চাচ্ছে। মাঠের পর্যালোচনা থেকে আমরা যেটা অনুধাবন করলাম। চট্টগ্রামে এখন যেটা প্রয়োজন সেটা হলো হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা। পরে আমরা এসব কেনার জন্য বাংলাদেশে যোগাযোগ শুরু করি। ইতোমধ্যেই একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি। চারটা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা কেনার ২৫ শতাংশ টাকা আমরা ভলেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনকে দিই। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এগুলোর ডেলিভারি হবে। এর মধ্যে আরও অনেকে আছে যারা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সহায়তা করতে ইচ্ছুক।

তিনি বলেন, শুধু হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা হলেই হবে না, আমাদের দেখতে হবে যে আইসিইউ সাপোর্ট আছে কি-না? আইসিইউ বেড আছে কি-না? এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো, আমরা কি আরও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দেব, নাকি অন্য কিছু। ডা. কাজন আরও কিছু জিনিস চেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, এন৯৫ মাস্ক, পিপিই, পালস অক্সিমিটারসহ আরও কিছু। পরবর্তী ধাপে সেগুলোর ব্যবস্থা আমরা করবো। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতালেও দেয়া যাবে। কিছু ফিল্ড হাসপাতাল হচ্ছে সেখানে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দেয়া না গেলেও রেগুলার অক্সিজেন দিয়ে আমরা সাহায্য করতে পারবো।

আইসিইউ নিয়ে চমেক হাসপাতালের পরিস্থিতি তুলে অধ্যক্ষ শামীম হাসান বলেন, যখন করোনা পরিস্থিতি শুরু হয়নি, তখন আমাদের জেনারেল আইসিইউ ছিলে ১২টি বেডের, পেরিট্রিক আইসিইউ ছিল ১২টি বেডের, কার্ডিয়াক সার্জারিতে আট বেড, কার্ডিয়াক মেডিসিনে ১২ বেড। এখন যখন আমরা করোনা ওয়ার্ড করলাম, সেখানে আমাদের ১০টি আইসিইউ বেডের সংযোজন করা হয়। এসময় সকল সুবিধাসহ ভেন্টিলেটর ছিল চারটি, এর মধ্যে টিকে গ্রুপ থেকে পেয়েছি ১০টি, ইয়ং ওয়ান কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি ২০টি হাইকোয়ালিটি বেড দিয়েছেন, সেগুলো আইসিইউ বেডের মতই।

বৈঠকের শেষ পর্যায়ে ডা. বি এম আতিকুজ্জামান জানান, করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামকে আরও বড় পরিসরে সহায়তার জন্য তারা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

আজ মাধ্যমিক ও কারিগরিতে যেসব ক্লাস

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় টেলিভিশনে পাঠদান কার্যক্রম সম্প্রচার শুরু হয়েছে। ছুটির দিন বাদে অন্যান্য দিনে জাতীয় সংসদ টেলিভিশনে মাধ্যমিকের বিভিন্ন স্তরে পাঠদান সম্প্রচার করা হচ্ছে। বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে মাধ্যমিকে ৫টি ও কারিগরির তিনটিটিসহ মোট ৮টি বিষয়ের ক্লাস প্রচার করা হবে।

গত শনিবার মাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের চলতি সপ্তাহের ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে মাধ্যমিকে ও কারিগরির ২১ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত যেসব ক্লাস সম্প্রচার করা হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
বুধবার মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের পাঁচটি ক্লাস করানো হবে। দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত স্টুডিওতে ধারণ করা এসব ক্লাস সম্প্রচারিত হবে। তবে এর আগে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে কারিগরি শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়ে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলবে।

ক্লাস রুটিনে বলা হয়েছে, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তার আওতাধীন প্রতিষ্ঠান এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও শ্রেণি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে অবহিত করবেন। জাতীয় সংসদ অধিবেশন পরিচালনা হওয়ার কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাস সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে ক্লাস রুটিন পরিবর্তন হতে পারে। আগামী সপ্তাহে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) ওয়েবসাইটে নতুন ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হবে।

প্রতিটি ক্লাস ২০ মিনিট করে প্রচার করা হচ্ছে। তার সঙ্গে প্রতিদিনের শিক্ষার্থীদের জন্য হোমওয়ার্ক (বাসার কাজ) দেয়া হবে। পরদিন তা টেলিভিশনের স্ক্রিনে সঠিক উত্তরগুলো দেখানো হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষার্থীদের এসব বাসার কাজের খাতা মূল্যায়ন করে নম্বর দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাউশি।

পাশাপাশি টেলিভিশনে প্রচার হওয়া সব ক্লাস কিশোর বাতায়নে দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময়ে তা দেখতে পারবে। সেখানে নানা ধরনের কুইজের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীরা খেলার ছলে শিখতে পারবে।


মাধ্যমিকে টেলিভিশন ক্লাসে আজ যা থাকছে

ষষ্ঠ শ্রেণির গণিত বিষয়ের ক্লাস দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে ২টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত, সপ্তম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দুপুর ২টা ৫৫ মিনিট থেকে ৩টা ১৫ মিনিট, অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস ৩টা ১৫ মিনিট থেকে ৩টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত, নবম শ্রেণির জীববিজ্ঞান ক্লাস ৩টা ৩৫ মিনিট থেকে ৩টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত, দশম শ্রেণির গণিত বিষয়ের ক্লাস ৩টা ৫৫ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রচার করা হবে।

কারিগরি স্তরে নবম শ্রেণির জেনারেল ইলেকটনিক্স ক্লাস দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত, দুপুর ২টা ৫০ মিনিট থেকে ৩টা ১০ মিনিট পর্যন্ত দশম শ্রেণির পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং এবং ৩টা ১০ মিনিট থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দশম শ্রেণির মেশিন ট্যুলস অপারেশন ক্লাস সম্প্রচার করা হবে।

বাড়িতে সবজি ও ফল চাষের সহজ উপায়

সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো ‘নিরাপদ খাদ্য’। বিশেষ করে বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য অনেকটা বাঘের দুধের মতোই দুষ্প্রাপ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাল-ডাল, তরি-তরকারি, ফল-মূল, মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, তেল-ঘি, লবণ-মসলাসহ বাজারের কোন খাদ্যই এখন ভেজাল বা দূষণমুক্ত নয়। বিশ্বাস করা কঠিন হয়, যদি কেউ দাবি করে তার খাদ্যে কোন ভেজাল নেই বা সম্পূর্ণ নিরাপদ। নিরুপায় মানুষ জেনেশুনে এ সমস্ত ভেজাল, দূষণযুক্ত খাদ্য চড়া দামে কিনে খাচ্ছে। পরিণামে নানা জটিল আর জীবন সংশয়ী অসুখে ভুগছে লাখ লাখ মানুষ। ঘরে ঘরে এখন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনি ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী। শিশুরা জন্ম নিচ্ছে বিকলাঙ্গ, প্রতিবন্ধী, জটিল রোগ নিয়ে। এমনকি এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে। ভয়াবহ এক পরিস্থিতির মধ্যে জীবন কাটাচ্ছি আমরা এবং আরও ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। এখনই যদি আমরা সচেতন না হই এবং দেশের জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করি, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের করুণ পরিণতির জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই দায়ি থাকবো।

দেশের বেশিরভাগ মানুষ বিশেষত নারী ও শিশুরা নানা ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছেন। বর্তমানে চলমান করোনা মহামারী মোকাবিলায় অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপর। এ জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শাক-সবজি ও ফল-মূল খাওয়া জরুরি। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি ইঞ্চি জমি ফসল আবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামগ্রিক বিবেচনায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত বসতভিটাভিত্তিক নিবিড় সবজি ও ফল চাষের প্রযুক্তি দেশের জনগণের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য জোগানে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। গ্রাম ও মফস্বল অঞ্চলের প্রতিটি বসতবাড়িতে এই প্রযুক্তি বা মডেলের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, তবে খুব সহজেই দেশের ৫০-৬০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি জোগান দেওয়া সম্ভব।

দেশের জনগণের বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ খাদ্য এবং তাদের পুষ্টি নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অনেক আগে থেকেই গবেষণা চালিয়ে আসছে এবং বেশ কিছু কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। বারির সরেজমিন গবেষণা বিভাগের বিজ্ঞানীরা ৮০’র দশকে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার কালিকাপুরস্থ ফার্মিং সিস্টেম গবেষণা এলাকায় প্রথম উদ্ভাবন করেন বসতবাড়ির আঙিনায় নিবিড় সবজি চাষের প্রযুক্তি ‘কালিকাপুর মডেল’। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বসতভিটায় সারা বছরব্যাপী সবজি উৎপাদন করা সম্ভব হয় এবং উৎপাদিত সবজি দিয়ে পারিবারিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি উদ্বৃত্ত সবজি আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশিদের উপহার দেওয়া ও বিক্রি করে বেশ কিছু বাড়তি আয় করা সম্ভব হয়। বসতবাড়ির বাগানে জৈব সার (যেমন গোবর, খামারজাত আবর্জনা, রান্নাঘরের উচ্ছিষ্টাংশ ইত্যাদি) বেশি ব্যবহার করা হয় বিধায় রাসায়নিক সার কম লাগে। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বসতবাড়ির বাগানে রাসায়নিক কীট বা জীবাণুনাশক প্রয়োগ করা হয় না, তাই উৎপাদিত সবজি বিষমুক্ত এবং নিরাপদ। আর নিয়মিত বাগানের টাটকা সবজি খাওয়ার ফলে পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদা সহজেই পূরণ হয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।

প্রযুক্তিটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাধ্যমে প্রযুক্তিটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) প্রযুক্তিটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রসারণ করে। তবে কৃষি পরিবেশ, বসতবাড়ির আকার-আকৃতি ও ব্যবহারের ভিন্নতা এবং এলাকাভেদে কৃষকের পছন্দের তারতম্যের কারণে কালিকাপুর মডেলটি সর্বত্র ব্যবহারে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তাই পরবর্তীতে বারির সরেজমিন গবেষণা বিভাগের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে অবস্থিত ফার্মিং সিস্টেম গবেষণা এলাকায় নির্বাচিত কৃষকের বসতবাড়িতে গবেষণা চালিয়ে নিবিড় সবজি ও ফল চাষের আরও আধুনিক এবং অধিক উৎপাদনশীল কিছু মডেল উদ্ভাবন করেছেন। যেমন: পাবনা এলাকার জন্য ‘গয়েশপুর মডেল’, রংপুর এলাকার জন্য ‘রংপুর মডেল’, বরেন্দ্র এলাকার জন্য ‘বরেন্দ্র মডেল’, টাঙ্গাইল এলাকার জন্য ‘পালিমা মডেল’, সিলেট এলাকার জন্য ‘গোলাপগঞ্জ মডেল’, শেরপুর অঞ্চলের জন্য ‘কুসুমহাটি মডেল’, ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য ‘ঈশানগোপালপুর মডেল’, বৃহত্তর পটুয়াখালী ও বরিশাল এলাকার জন্য ‘লেবুখালী মডেল (অলবণাক্ত এলাকা) এবং কলাপাড়া মডেল (লবণাক্ত এলাকা)’, এবং নোয়াখালী এলাকার জন্য ‘আটকাপালিয়া মডেল’।

এ ক্ষেত্রে বসতবাড়ির সম্ভাব্য সব স্থানের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে যতটা বেশি সম্ভব সবজি (লালশাক, ডাঁটা শাক, পুঁই শাক, গীমা কলমি, পালং শাক, ধনিয়া শাক, কচু শাক ও কচু, টমেটো, বেগুন, মূলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, শিম, বরবটি, লাউ, করলা, চালকুমড়া, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়শ, আলু ইত্যাদি), মসলা (বিলাতি ধনিয়া, পিঁয়াজ, মরিচ, আদা ও হলুদ ইত্যাদি) এবং ফল (আম, পেয়ারা, লেবু, কুল, লিচু, পেঁপে, আনারস ইত্যাদি) উৎপাদনের চেষ্টা করা হয়েছে এবং চমৎকার ফলাফল পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ সবজি, মসলা ও ফলের ক্ষেত্রে বারি উদ্ভাবিত জাত ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকটি মডেলের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো-
মডেল অনুযায়ী বসতভিটার রৌদ্রযুক্ত স্থানে ৪-৫টি বেড তৈরি করে, বাগানের ও বাড়ির চারপাশের বেড়ায়, মাচায়, আংশিক ছায়াযুক্ত স্থান, ভেজা বা স্যাঁতস্যাতে স্থানে, ঘরের পেছনের পরিত্যাক্ত স্থানে, অফলা বা বনজ বৃক্ষে এবং ঘরের চালে নির্দিষ্ট ফসল বিন্যাস অনুসরণ করে বছরে ১২ থেকে ২৪ ধরনের সবজি ক্রমান্বয়ে উৎপাদন করা যায়। ফলে একটি কৃষক পরিবার সারা বছর ধরে সবজি কম-বেশি সংগ্রহ করে তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারে। এ ছাড়া উৎপাদিত মসলা ও ফল দিয়ে পরিবারের প্রয়োজন অনেকাংশে পূরণ করা যায়। গবেষণায় দেখা যায়, অংশগ্রহণকারী কৃষক পরিবারের সদস্যরা গবেষণা শুরুর আগে এলাকাভেদে প্রতিদিন মাথাপিছু ৬৮-১১০ গ্রাম সবজি গ্রহণ করতো (বয়সভেদে একজন ব্যক্তির দৈনিক ৮৮-২২০ গ্রাম সবজি গ্রহণ করা দরকার)। মডেল অনুযায়ী সবজি আবাদ করার পর তাদের সবজি গ্রহণের পরিমাণ দাঁড়ায় মডেল ও এলাকাভেদে প্রতিদিন মাথাপিছু গড়ে ৮৮-২৩৬ গ্রাম।

উল্লেখ্য, যে সমস্ত কৃষকের বসতবাড়িতে এই গবেষণা কাজ পরিচালনা করা হয়েছিল দু’তিন বছর পর তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, তারা কিছু শাক-সবজি আবাদ করলেও মডেলগুলো আর হুবহু অনুসরণ করছেন না। কারণ হিসেবে তারা জানান, গবেষণার মাধ্যমে বসতবাড়িতে সারা বছরব্যাপী সবজি চাষের যে মডেল উদ্ভাবন করা হয়েছে তা খুবই কার্যকর এবং উত্তম কিন্তু যথাসময়ে বীজ ও সারের জোগান না থাকায় তারা মডেলগুলো অনুসরণ করতে পারছেন না। কেউ কেউ আবার সময় এবং জনবলের অভাবের কথাও বলেছেন। এখানে উল্লেখ্য, বসতবাড়িতে এসব ফসল চাষে নারী ও শিশুরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তাই যথাসময়ে প্রয়োজনীয় বীজ বা চারা ও সার তাদের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া গেলে বসতবাড়িতে সবজি, মসলা ও ফল উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। গ্রামীণ বসতভিটাগুলোতে সুপরিকল্পিতভাবে শাক-সবজি, ফল-মূল ও মসলা উৎপাদন উৎসাহিত করার জন্য সরকার বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করতে পারেন অথবা প্রতি বছর সরকার কৃষি খাতে যে ভর্তুকি প্রদান করেন, তার কিছু অংশ দিয়ে যথাসময়ে কৃষকের দোরগোড়ায় মানসম্পন্ন বীজ ও সারের জোগান নিশ্চিত করা যেতে পারে (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবং এর তত্ত্বাবধানে সুপ্রতিষ্ঠিত এনজিও সমূহের মাধ্যমে)। বসতবাড়িতে শাক-সবজি, ফল-মূল ও মসলা ইত্যাদি উৎপাদনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বা কোন বেসরকারি সংস্থার প্রকল্প চলমান থাকলে সেখানে বারি উদ্ভাবিত প্রযুক্তি (এলাকা উপযোগী মডেল) অন্তর্ভুক্ত ও যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। আর কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে সাহায্য করতে পারেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা, মাঠকর্মী এবং বারির বিজ্ঞানীরা।


বিশ্বের দ্রুততম কম্পিউটার তৈরি করলো জাপান

চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে শীর্ষে চলে এলো জাপান। জাপানের রিকেন রিসার্স ইনস্টিটিউট এবং ফুজিৎসু লিমিটেড বিশ্বের দ্রুততম কম্পিউটার তৈরি করেছে। এই কম্পিউটার চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুততর কম্পিউটারগুলোর চেয়েও দ্রুত।

এক সমীক্ষার বরাত দিয়ে টেকগ্যাপ জানিয়েছে, জাপানের ফুগাকু নামের এই সুপার কম্পিউটারকে প্রথম স্থান দেওয়া হয়েছে। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনা সুপার কম্পিউটারগুলোর তুলনায় দ্রুততম বলে মনে করা হচ্ছে। এই কম্পিউটারে কম্প্যুটেশনাল সায়েন্সের রিকেন সেন্টারে ইনস্টল করা আছে।

এই সুপার কম্পিউটারটি ২০২১ সালের মধ্যে এর সব কার্যক্রম শুরু করবে। ড্রাগ পুনরুদ্ধার থেকে শুরু করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস, সমস্ত তথ্য দিতে পারে এই সুপার কম্পিউটারটি।

এই সুরক্ষা কম্পিউটারে দেড় লাখেরও বেশি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, এই কম্পিউটারের স্পিড, বিশ্বের অন্যান্য দ্রুত কম্পিউটারের তুলনায় ২.৮ গুণ বেশি।

সফ্টব্যাঙ্ক গ্রুপ কর্পোরেশন আর্মস লিমিটেডের টেকনোলজি ব্যবহার করে এই কম্পিউটারটি তৈরি করা হয়েছে। আর্মসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পারফরম্যান্সের নিরিখে এই কম্পিউটারটি ইন্টেল কর্পোরেশনের কম্পিউটারে টেক্কা দেবে। আর্ম প্রসেসরগুলো বিশ্বের বেশিরভাগ স্মার্টফোনে ব্যবহৃত হয়।

এদিকে অ্যাপল শিগগিরই তার ম্যাক কম্পিউটারগুলোতে এই প্রসেসর ব্যবহার করবে।


উল্লেখ্য, ৯ বছর পর চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পিছনে ফেলে জাপান প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এর আগে ২০১১ সালে ফুজিৎসু’র “কে” কম্পিউটার প্রথম স্থান অর্জন করে।

করোনাভাইরাস যেভাবে আপনাকে স্বার্থপর করে তুলতে পারে

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া মহামারী এখন বিশ্বজুড়ে। সংক্রমণটি সারা বিশ্বেই মানুষের জীবনকে এক বিশাল হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন বদলে দিয়ে অনেকটা কঠোর হতে বাধ্য করেছে বলা চলে। চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা দিনরাত চেষ্টা করছেন এর প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে। কিন্তু এখনও মেলেনি সমাধান। তাই নিজের প্রতি খেয়াল রাখা ও সচেতন থাকার বিকল্প নেই।

সামাজিক দূরত্ব, লকডাউন এবং কোয়ারেন্টাইন, ঘরে থেকে কাজ করা- এসব আমাদের আগের পৃথিবীকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। একান্তই জরুরি না হলে বাইরে বের হচ্ছেন না বেশিরভাগ মানুষ। ভবিষ্যত জীবনের সবকিছুই অনিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে, এবং এটি বিশ্বজুড়ে মানুষের মানসিক অবস্থাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। এমনটাই বলছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিকূলতার মাঝেও ইতিবাচক এবং আশাবাদী থাকার লড়াইয়ের ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মানসিকতায় একটি পরিবর্তন দেখা যায়।কারণ আমরা ধীরে ধীরে আমাদের প্রয়োজনকে প্রথমে রাখতে শুরু করি। অতএব, যদি আপনিও মনে করেন যে আপনি ধৈর্য ও সহানুভূতির খুব বেশি দেখাতে পারছেন না, তবে আপনি একা নন। আমাদের বেশিরভাগই এখন নানা দায়িত্ব, ঘরের কাজকর্ম নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।

হঠাৎ আসা তুমুল পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে গিয়ে আমরা সবাই এখন কম-বেশি ক্লান্ত। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে খুব কম লোকের শক্তি আছে অন্যদের কথাও ভাবার। প্রতিদিনের নানা নেতিবাচক খবর, চারদিক থেকে মানসিক নানা চাপে যথেষ্ট শক্তি বা মমতা না থাকলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।


মহামারী চলাকালীন আপনি যদি আরও স্বার্থপর বোধ করে থাকেন তবে এর ফলে আপনি প্রচুর চাপের মুখোমুখি হতে পারেন। অবিশ্বাস্যরকম স্ট্রেসাল পরিস্থিতিতে আমাদের দেহটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্লাইট-অর-ফাইট মোডে চলে যায়, যার ফলে দীর্ঘকালীন তীব্র মানসিক অবসন্নতা দেখা দেয়।

আমাদের বুঝতে হবে, যেহেতু আমরা সবাই কঠিন পরিস্থিতিতে বেঁচে আছি এবং প্রতিদিন অভিনব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি, তাই যদি আপনার প্রথম অগ্রাধিকার নিজের যত্ন নেওয়া হয় তবে এটি স্বার্থপরতা নয়। চাপ এবং উদ্বেগের মধ্যে ডুবে না থাকলেই কেবল অন্যকে সাহায্য করার কথা ভাবা সম্ভব। কিন্তু অন্যের জন্য কিছু করতে না পারার ব্যর্থতাও অনেককে হতাশায় ডোবায়। এজন্য প্রথম পদক্ষেপটি হলো নিজের যত্ন নেয়া। সময়মতো ঘুমানো, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট নিজের জন্য সময় বের করা প্রয়োজন।

আপনি সঠিকভাবে কাজ করার জন্য আপনার শরীর এবং মনকে সঠিক যোগান দিতে পারলে এরপর অন্যের জন্য চিন্তা করার সময় পাবেন। খুব বেশি চাপ নেবেন না, আপনার যতটুকু সামর্থ্য হয়, ঠিক ততটুকুই করুন। একটা ফোন কলে স্বজনদের খোঁজ নেয়াও কিন্তু এক ধরনের মানসিক সহায়তা। এভাবে ছোট ছোট সহায়তা আপনি করতেই পারেন। তাতে করে নিজেকে স্বার্থপর ভাবার নেতিবাচক মনোভাব দূর হবে।

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget