Latest Post
92 অন্যান্য 51 অর্থনীতি 24 আইন ও আদালত 76 আন্তর্জাতিক 613 এক ঝলক 3 কক্সবাজার 1 কবিতা 22 কিশোরগঞ্জ 4 কুড়িগ্রাম 6 কুমিল্লা 1 কুষ্টিয়া 3 কৃষি 107 কৃষি ও প্রকৃতি 10 ক্রিকেট 1 খাগড়াছড়ি 73 খেলাধুলা 49 গণমাধ্যম 12 গাইবান্ধা 1 গাজীপুর 17 চট্টগ্রাম 5 চাঁদপুর 5 চাঁপাইনবাবগঞ্জ 2 চুয়াডাঙ্গা 14 জয়পুরহাট 1 জাতীয় 3 জামালপুর 1 জোকস 6 ঝনিাইদহ 246 ঝালকাঠি 12 ঝিনাইদহ 4 টাঙ্গাইল 44 ঠাকুরগাঁও 39 ঢাকা 1 থী 4 দিনাজপুর 4807 দেশজুড়ে 42 ধর্ম 3437 নওগাঁ 14 নাটোর 2 নারায়ণগঞ্জ 1 নিহত ২ 1 নীলফামারীর 2 নেত্রকোনা 1 নোয়াখালী 3 পঞ্চগড় 4 পিরোজপু 2 প্রকৃতি 2807 প্রথম পাতা 23 প্রবাস 1 ফরিদপুর 17 ফিচার 8 ফুটবল 1 ফেনী 94 বগুড়া 2 বলিউড 58 বাগমারা 84 বিএমএসএফ 31 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 53 বিনোদন 51 বেনাপোল 2 ব্রাক্ষণবাড়িয়া 1 ব্রাহ্মণবাড়িয়া 51 ভিডিও 18 ভোলা 8 ভ্রমণ 59 ময়মুনসিংহ 1 মাগুরা 1 মাদারীপু 2 মাদারীপুর 1 মানিকগঞ্জ 1 মেহেরপুর 495 যশোর 5 রংপুর 103 রাজনীতি 3 রাজবাড়ী 95 রাজশাহী 3 লক্ষ্মীপুর 24 লাইফস্টাইল 2 লালমনিরহা 41 শিক্ষা 1 শ্রীপুর 891 সকল জেলা 2 সাতক্ষীরা 9 সিরাজগঞ্জ 3 সিলেট 63 সুনামগঞ্জ 31 স্বাস্থ্য 4 হবিগঞ্জ 1 হলিউড 10 bmsf

নওগাঁর পত্মীতলায় স্থগিত হওয়া ৪ ইউপির ৫টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহন

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : নওগাঁর পত্মীতলায় ৫ম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে গোলযোগ ও সহিংসতায় স্থগিতহওয়া ৪ ইউপির ৫টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহন শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে এই ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিরতিহীন ভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এই ৪ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন ১৯ জন প্রার্থী। 

স্থগিত হওয়া ৫টি কেন্দ্রের মোট ভোটার ১০ হাজার ১৬০ জন। এরমধ্যে পত্মীতলা ইউনিয়নে ইভিএম ও বাকি চার কেন্দ্রে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্থগিত হওয়া ভোট কেন্দ্রগুলো হল, পত্মীতলা ইউনিয়নের মথুরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোষনগর ইউনিয়নের কমলাবাড়ি ও ঘোষনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আকবরপুর ইউনিয়নের মান্দাইন উচ্চ বিদ্যালয় ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পানিওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। 

এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ  ভাবে শেষকরতে ভোটকেন্দ্রে ও কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ, আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতি কেন্দ্রে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, দুই কেন্দ্র মিলে একজন এ্যাডিশনাল এসপি, স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ মোবাইল টিমের টহল জোরদার করা হয়েছে।

নওগাঁয় কৃষকের ফসল বাচাতে জেলা প্রশাসককে স্বারকলিপি প্রদান

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : নওগাঁর সদর উপজেলার বক্তারপুর মডেল ইউনিয়নের কৃষকের ফসল বাঁচাতে সরকারী রেকর্ডভুক্ত খাল সংস্কার এর দাবীতে জেলা প্রশাসককে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নওগাঁ জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে খালেদ মেহেদী হাসান পিএএ,এর নিকট বক্তারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সারোয়ার কামাল চঞ্চলসহ প্রায় ১০ গ্রামের কৃষককের ৩হাজার বিঘা জমির রোপন কৃত বোরো ধান হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। হঠাৎ বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের বাধাঁগ্রস্থ হওয়ায় রোপন কৃত বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেলে ঐ এলাকার কৃষকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে বক্তারপুর ইউনিয়নের, চন্দনা বিল, কুমড়ার বিল ও নলগাড়া বিলের মধ্যদিয়ে সরকারী রেকর্ডভুক্ত খালটি এখনো কিছু প্রভাবশালীদের দখলে যাওয়ায় পানি নিস্কাশনে বাধাগ্রস্থ হলে ঐ ১০ গ্রামের কৃষক ক্ষতির সম্মক্ষিন হয়ে পরেন বলে মনে করেন এলাকার কৃষক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বক্তারপুর ইউনিয়নের, চন্দনা বিল, কুমড়ার বিল ও নলগাড়া বিলের মধ্যদিয়ে সরকারী রেকর্ডভুক্ত খালটি দ্রæত সংস্কার করার দাবীতে কৃষকদের গণস্বাক্ষর কৃত স্বারকলিপি প্রদান করেন। ঐ সরকারী রেকর্ডভুক্ত খালটি দ্রæত সংস্কার করতে হলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পাশদিয়ে ফলিমারা ব্রিজ হয়ে দিঘলীর বিলের সাথে পূনরায় সংযোগ করে দিলে কৃষকের ভোগান্তী কমবে বলে মনে করেন তাঁরা। স্বারকলিপিটি জেলা প্রশাসকসহ উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রদান করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।


চেয়ারম্যান সারোয়ার কামাল চঞ্চল বলেন, বক্তারপুর ইউনিয়ন বাসীর দাবী সরকারী রেকর্ডভুক্ত খালটি কিছু প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। এই খালটি অবৈধ দখল মুক্ত করে পানি নিস্কাশনের ব্যাবস্থা করলে আমার ইউনিয়নের ১০ গ্রামের কৃষক সুষ্ঠ ভাবে ফসল ঘড়ে তুলতে পারবে বলে মনে করছি। তিনি আরও বলেন সরকারী রেকর্ডভুক্ত খালটি প্রভাবশালীদের দখলে না রেখে পূনরায় খালটি খনন করে কৃষকদের বাঁচাতে বা কৃষি সেক্টরকে বাঁচাতে হবে জানান তিনি। কৃষকদের কথা ভেবে আজকে কৃষকদের ডাকে জেলা প্রশাসক এর কাছে একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু নওগাঁ জেলা কৃষি নির্ভরশীল জেলা তাই দ্রæত সরকারী রেকর্ডভুক্ত খালটি সংস্কার করে কৃষকের প্রাণের দাবী পূরন করবে জেলা প্রশাসন এটি আমার ইউনিয়ন বাসীর আশা।


নওগাঁ জেলা প্রশাসন খালেদ মেহেদী হাসান পিএএ বলেন, যেহেতু নওগাঁ জেলা কৃষি নির্ভরশীল জেলা এই জন্য কৃষকের কথা ভেবে দ্রæত পানি নিস্কাশনের ব্যাস্থার গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে তিনি বলেন সরকারী রেকর্ডভুক্ত খালটির বিষয়ে তদন্ত করে দ্রæত দখলমুক্ত করে পূনরায় পানি নিস্কাশনের উপযোগী করে তোলা হবে।

র‌্যাবের পৃথক দুটি অভিযানে ফেনসিডিল ইয়াবাসহ আটক ২

মো. সাইদুল ইসলাম, বেনাপোল : যশোরের শার্শা-বেনাপোলে পৃথক দুটি অভিযানে ৪৩০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৪৬ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাব সদস্যরা।

মঙ্গলবার র‌্যাব-৬ এর কোম্পানী কমান্ডার এম নাজিউর রহমান উদ্ধারকৃত ফেনসিডিল ও ইয়াবাসহ আসামী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আটক মাদক ব্যবসায়ী হিরু বিশ্বাস বেনাপোল নামাজ গ্রামের মৃত আঃ রাজ্জাকের ছেলে ও মো. মফিজুল রহমান গয়রা গ্রামের কদর আলীর ছেলে। 

যশোর র‌্যাব-৬ সিপিসি ৩ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার এম নাজিউর রহমান বলেন,  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে সীমান্তবর্তী শার্শা রেল বাজার এলাকা থেকে ৪৩০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ হিরু ও ৪৬ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিলসহ মফিজুল নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। আটক আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে শার্শা ও বেনাপোল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।


 
নওগাঁর সংগীত শিল্পী  সাথীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী গ্রেফতার

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : নওগাঁর সিগনেচার মিউজিক্যাল ব্যান্ড এর সংগীত শিল্পী ও ভারত বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৈত্রী পরিষদ এর নওগাঁ জেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সংগীত শিল্পী শামীমা সাথী কে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগে তার স্বামী চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের বাবলু হোসেনের ছেলে শাহিনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শাহিন তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চাপাইনবাবগঞ্জ সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো। সাথী বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারের মুজিবর রহমানের মেয়ে। মঙ্গলবার সকালে সান্তাহার স্টেশন কলোনী সংলগ্ন শাতাহার এলাকায় সাথীর জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়।


 

সাথীর বড় ভাই সেলিম রেজা জানান, সাথী একজন সংগীত শিল্পী। সে কয়েক বছর পূর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শাহীনকে ভালোবেসে বিয়ে করে। তাদের ঘরে ফুটফুটে ১বছরের শিশুকন্যা রয়েছে। শাহীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। কিন্তু ব্যক্তিগত আচরণের কারনে সে কিছুদিন আগে চাকরিচ্যুত হয়। বিয়ের পর থেকেই তারা ভাড়া বাসা নিয়ে নওগাঁয় বসবাস করতেন। সাথীকে বিয়ের আগে শাহীন আরো একটি বিয়ে করেেেছন। এই বিষয়টি গোপন রেখেই সাথীকে ২য় বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শাহীন ও সাথীর মধ্যে মনমালিন্যের সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে নওগাঁ ভাড়া বাসায় সাথীকে একা ফেলে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চলে যায় তার স্বামী। গত তিনদিন আগে নওগাঁ থেকে সাথী তার স্বামীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ যায় এবং গত রোববার দিবাগত রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। সাথীর মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই। সাথীর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। শাহিন আমার বোন সাথীকে হত্যা করেছে। আমি শাহিনের কঠোর শাস্তি দাবী করছি। খবর পেয়ে পুলিশ সাথীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দেয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফফর হোসেন বলেন পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সাথীর স্বামী শাহিনকে সোমবার গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে সাথীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারনা করা হচ্ছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং তখন পরবর্তি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


ঝালকাঠির আমুয়া বাজারে মধ্য রাতে ৮টি দোকান আগুনে পুড়ে ছাই
রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি : ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার আমুয়া বাজারে শুক্রবার দিবাগত রাতে আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্কুলের ৩টি কক্ষ। আগুন নেভাতে কাঠালিয়া বামনা থেকে আসা দমকল বাহিনীর ২টি ইউনিট দুই ঘন্টা কাজ করেছে।

এ অগ্নিকান্ডে ৮ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে আনুমানিক ১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কাঠালিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ষ্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এতে বড় ধরনের কোনো হতাহত হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। ক্ষয় ক্ষতির পরিমান আনুমানিক ৩০ লাখ টাকা হতে পারে বলে ক্ষতিগ্রস্থ, স্থানীয় এবং ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। 
বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে এ আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছেন ফায়ার সার্ভিস। 
বাজারের নৈশ প্রহরীরা নেছারের হোটেলে আগুন জ্বলতে দেখে ডাক চিৎকার ও স্থানীয় মসজিদে মাইকিং করে আগুনের বিষয়টি জানিয়ে সকলে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

আগুনে পুড়ে আমুয়ার আমীর মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিনসেট ৩টি কক্ষ, নেছার উদ্দিনের খাবারের হোটেল, মোহাম্মদ পলাশ এবং কম্পিউটারের দোকান, মাসুদ হোসেন এর জুতার গোডাউন, বাবুল হোসেন এর পোষাকের দোকান, মোহাম্মদ শাহজাহান এর মুদি দোকানসহ ৮ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পুর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

রাতেই ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মবর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার।

রাজু ভাষ্কর্যের সামনে শুন্যে ভাসছে নওগাঁর ব্যালে বালিকা ইরা

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : তার পরিচয় আর নওগাঁ সরকারি কলেজে সীমাবদ্ধ নেই, আটকে নেই নওগাঁ জেলায়ও। তার নাম দেশ ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে বিদেশেও। এই পরিচয় এনে দিয়েছে তারই কীর্তি, তারই নৃত্য। তার পরিচয় এখন ‘ব্যালে বালিকা’। নাম মোবাশ্বিরা কামাল ইরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে তার ব্যালে নৃত্যকলা দারুণ মুগ্ধতায় ডুবিয়েছে শিল্প-সংস্কৃতিপ্রেমীদের। কেউ তাকে দিচ্ছেন ‘উচ্ছল মুক্ত বিহঙ্গ’ উপাধি। কেউ বলছেন ‘বাংলার উড়ন্ত মানবী’। কারও মতে ‘আগুন ডানার পাখি’। কেউবা তার নৃত্যের প্রকাশকে বলছেন ‘নারীমুক্তির অভিব্যক্তি’ হিসেবে। যে কলা-কৌশলে ছবিতে পোজ দেওয়া হয়েছে, সেটি নাচের একটি নতুন ধরন। ব্যালে ও জিমন্যাস্টিকসের সমন্বয়ে নাচের এ ফর্ম। এখানে নাচের সঙ্গে অভিনয় এবং সংগীতের অপূর্ব সমন্বয় ঘটে। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার থাকায় অনেকে এমন নান্দনিক প্রকাশকে ‘সংকট থেকে মুক্তির প্রতীক’ও বলছেন। কেউ কেউ আবার ছবির ক্যাপশনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার পঙক্তিও দিচ্ছেন। এই ব্যালে নৃত্যের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর পর ইরা যেমন ভাসছেন প্রশংসার জোয়ারে, তেমনি সামলাতে হচ্ছে গণমাধ্যমকেও।



ইরার বাড়ি নওগাঁ শহরের জগৎসিংহপুর মহল্লার বটতলা মোড় সংলগ্ন। আবু হায়াৎ মোহাম্মদ কামাল ও ফাহমিদা আক্তার দম্পতির চার মেয়ের মধ্যে মোবাশ্বিরা কামাল ইরা তৃতীয়। বাবা ব্যবসায়ী এবং মা গৃহিণী। নওগাঁ সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে বাণিজ্য শাখায় পড়ছেন ইরা। এর আগে ২০২০ সালে নওগাঁ সীমান্ত পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। শৈশব থেকেই ইরা ছিলেন অদম্য মেধাবী ও চঞ্চল প্রকৃতির। বেড়ে ওঠা নওগাঁ শহরেই। বরাবরই নাচ করতে ভালোবাসেন। শৈশবে শিক্ষক সুলতান মাহমুদের কাছে নাচ শিখেছেন। পরে ঢাকায় ভরতনাট্যম শেখেন। তবে ব্যালে নৃত্যের ভাবনা মনে আসে ২০২০ সালের লকডাউনের সময়। ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিখতে শুরু করেন ব্যালে। এজন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। ২০২১ সালে সাধনা নামে একটি নাচের সংগঠনের সঙ্গে কাজ শুরু করেন ইরা।

এর মধ্যে পরিচয় হয় ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার জয়িতা আফরিনের সঙ্গে। তিনি থাকেন ঢাকার ধানমন্ডিতে। গত ২০-২২ জানুয়ারি ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নৃত্য উৎসবে যোগ দিতে এসে জয়িতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইরা। দুজনে ফটোগ্রাফির আলাদা একটা অর্থ তৈরি করার চিন্তা করছিলেন। ২৩ জানুয়ারি সকালে দুজনে বেরিয়ে পড়েন। এমন সময় চোখে পড়ে রাজু ভাস্কর্যের পাশে চলমান বিভিন্ন আন্দোলনের প্ল্যাকার্ড-পোস্টার। সেখানে কয়েকটি ফটোশুট করেন। পরে ২৫ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে ফেসবুকে আপলোড দেওয়া হয়। সে ছবিগুলোই ছড়াতে ছড়াতে এখন সবার মুখে মুখে ইরার নাম।

ব্যালে বালিকা মোবাশ্বিরা কামাল ইরা বলেন, ৫-৬ বছর বয়স থেকেই শিক্ষক সুলতান মাহমুদের কাছে নাচ শিখেছি। ২০২০ সালে এসএসসি পাস করলাম। সে সময় ভারতে গিয়ে শাস্ত্রীয় নৃত্য ও ভরতনাট্যমের ওপর কিছু শেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দেশে লকডাউন ঘোষণা হলে মন খারাপ হয়ে যায়। তখন ভাবলাম আমার দ্বারা কিছু হবে না বা কিছুই করতে পারবো না। তখন মা পরামর্শ দিলেন ইউটিউব দেখে ঘরে বসে নাচ করতে। বলা যায় ইন্টারনেট দেখেই ‘ব্যালে’ শেখা। সবসময় ইচ্ছা ছিল নতুন কিছু শেখার। বাংলাদেশে ব্যালে করে এমন শিল্পী খুবই কম আছেন। কিন্তু দেশের বাইরে ব্যালের ব্যাপক প্রচলন আছে। আমার ইচ্ছা আছে ব্যালে নিয়ে কাজ করার।

নওগাঁর মতো মফস্বলে থেকে ব্যালে শেখায় কোনো বাধা ছিল কি না, জানতে চাইলে ইরা বলেন, মফস্বল থেকে কাজ করাটা অনেক কঠিন ছিল। ঢাকার মতো জায়গাতেও ব্যালে খুব একটা নেই। বাসায় অনুশীলন করার মতো জায়গা ছিল না। মা ড্রয়িং রুম ফাঁকা করে সেখানে অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দেন। প্রথম দিকে মেঝেতে অনুশীলন শুরু করলাম। পরে ইয়োগা ম্যাটসের ব্যবস্থা করা হলো। আস্তে আস্তে অনুশীলন করতে গিয়ে এক সময় তা অভ্যাসে পরিণত হলো। তবে অনেকেই আমার নাচটা ভালোভাবে নিতেন না। আবার অনেকেই উৎসাহ জুগিয়েছেন। কিন্তু এখন বলা চলে, সব মিলিয়ে পুরো যাত্রা ভালো হচ্ছে।‘সবক্ষেত্রেই মা আমাকে সার্বক্ষণিক সমর্থন দিয়েছেন ও সহযোগিতা করছেন এবং পাশে থেকেছেন। বাবা-মা সবার কাছেই আমি কৃতজ্ঞ।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যালে নৃত্যের ছবি এভাবে ভাইরাল হবে ভাবেননি ইরা। তিনি বলেন, যেভাবে ছবি সবাই শেয়ার করেছেন তা কল্পনাতীত এবং প্রশংসনীয়।

রাজু ভাষ্কর্যের সামনে শুন্যে ভাসছে নওগাঁর ব্যালে বালিকা ইরা

ইরা বলেন, লকডাউনের সময় ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে আপলোড করতাম। সেখান থেকে সাগর দেবনাথ নামে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তার ইচ্ছা ছিল এ ধরনের (ব্যালে) ফটোশুট করার। আমিও সমর্থন দিলাম। তারপর ঢাকায় যমুনা ফিউচার পার্কে কিছু ফটোশুট করলাম। তারপর জয়িতা আফরিন আপু ছবিগুলো দেখেন এবং তিনিও এ ধরনের ছবি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে পোষণ করেন। গত বছরের ২ নভেম্বর ধানমন্ডির লেকের পাড়ে ফটোশুট করা হয়। সেই ছবিগুলো ফেসবুকে আপলোডের পর মোটামুটি ভালো একটা সাড়া পাওয়া যায়। তারপর থেকে ঢাকার বিখ্যাত বিভিন্ন জায়গায় ফটোশুট করার পরিকল্পনা করি আমরা।স¤প্রতি যে ছবিগুলো ভাইরাল হয়েছে সেগুলো প্রসঙ্গে ইরা বলেন, আমার ইচ্ছা ছিল আমরা যেহেতু স্বাধীন দেশের নাগরিক, স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করার। আমার কাছে রাজু ভাস্কর্য মনে হয়েছিল স্বাধীনতা এবং মুক্তির প্রতীক। সেই চেতনা থেকেই সেখানে ফটোশুট করা। ছবিগুলো ভাইরাল হবে, এমন কোনো চিন্তা মাথায় ছিল না। ২৩ জানুয়ারি ফটোশুট করা হলে ২৫ জানুয়ারি আপলোড করা হয়। ফটোশুটের আগে এবং পরে ভয়ে ছিলাম। ছবি ফেসবুকে আপলোড করার দুইঘণ্টা পরও দুশ্চিন্তায় ছিলাম আগের মতো সাড়া পাবো কি না। এরপর বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন পেজে শেয়ার হতে থাকে। আমার মেসেঞ্জারে বিভিন্ন মিডিয়া সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করে। তখন আসলে বুঝতে পারিনি ছবিগুলো এতো সাড়া ফেলবে। সবাই আমাকে সমর্থন জুগিয়েছেন। এটা আমার কাছে বড় একটা প্রাপ্তি মনে করি, যার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা পাবো।’ ভবিষ্যৎ ভাবনা জানিয়ে ইরা বলেন, ভালোভাবে পড়াশোনা করে এইচএসসি পাস করতে চাই, যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। সেখানে নাচ নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। যেন নাচের মাধ্যমে কথা বোঝাতে পারি। আমাদের চলার অঙ্গভঙ্গি সবখানেই নাচের ব্যবহার আছে। নাচকে সমৃদ্ধ করে মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই। আমাদের নাচের সংস্কৃতিকে বিদেশে এবং বিদেশি নাচের সংস্কৃতিকে দেশে পরিচিত করতে চাই। এ দুইয়ের সংমিশ্রণে নতুন একটা প্লাটফর্ম তৈরি করতে চাই।



ইরার মা ফাহমিদা কামাল বলেন, ‘ছোট থেকেই নাচ ভালোবাসে ইরা। নাচের প্রথম হাতেখড়ি স্থানীয় সুলতান মাহমুদের কাছে। নাচে ইরার অনেক অর্জন আছে। পড়ালেখা আর নাচের পাশাপাশি জিম, স্কেটিং, টেনিস ও ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করে।’। ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে বলে সবাই আশাবাদী। তিনি জানান, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে তুরস্ক যান ইরা। সেখানে বিশ্বের ৪৫টি দেশের অংশগ্রহণে শিশু সমাবেশ হয়। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির দলনেত্রী হিসেবে ওই আয়োজনে পুরস্কার পান ইরা। তবে প্রথম দিকে ইরার নাচ নিয়ে পরিবার থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এখন অবশ্য সবাই তাকে সহযোগিতা করে। মেয়ে যেন প্রকৃত মানুষ হয় এবং পড়াশোনার পাশাপাশি সে যা করছে তা চালিয়ে যাবে, এটাই আমার কাম্য।


ইরার বাবা আবু হায়াৎ মোহাম্মদ কামাল বলেন, প্রথম চাওয়া মেয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষিত হবে এবং চাকরি করবে। আর দ্বিতীয়ত এ নাচকে সারাবিশ্বে পরিচিত করে দেশের সুনাম বয়ে নিয়ে আসবে। মেয়ে যতটুকু সামনে এগিয়ে যেতে পেরেছে সবটুকু চেষ্টা তার মায়ের। মেয়ের জন্য সে অনেক চেষ্টা ও ত্যাগ স্বীকার করেছে।

ইরার নাচের শিক্ষক ও নওগাঁর ‘নৃত্য রং একাডেমি’র প্রশিক্ষক সুলতান মাহমুদ বলেন, মোবাশ্বিরা কামাল ইরা ছোট থেকেই আমার কাছে নাচ শিখেছে। সব শিক্ষার্থীকে আমি আমার সন্তানের মতো ভালোবাসি। হাতেগোনা যে কয়জন প্রথম সারির শিক্ষার্থী রয়েছে সে তাদের মধ্যে একজন। সে খ্যাতি অর্জন করে নওগাঁবাসীর মুখ উজ্জ্বল করবে এটাই আমার চাওয়া। তার জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো।


যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget