জ্বালানি সংকট এড়ানো যেত বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই
অনলাইন ডেস্ক : দেশের ইতিহাসে জ্বালানি তেলের নজিরবিহীন দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসে শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে গণপরিবহন, দ্রব্যমূল্য, কৃষি উৎপাদন, মূল্যস্ফীতিসহ যাপিত জীবনের সব ক্ষেত্রে।
একদিকে গ্রাহকের ওপর চাপছে বাড়তি ব্যয়ের খড়গ, অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে আকাশচুম্বী দামের কারণে সংকুচিত করতে হচ্ছে জ্বালানির ব্যবহার। এমন বাস্তবতায় উদ্যাপন হচ্ছে এবারের জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে নিজস্ব জ্বালানির অনুসন্ধান ও সর্বোত্তম ব্যবহার গুরুত্ব পেলে অনেকটাই এড়ানো যেত এমন পরিস্থিতি।
এর মধ্যে আবার চলতি মাসেই বাড়তে পারে বিদ্যুতের পাইকারি দাম। অন্যদিকে, গ্যাসেরও দাম বাড়াতে চায় জ্বালানি বিভাগ। অথচ মাত্র দুই মাস আগে গ্রাহকের ওপর চাপানো হয়েছিল ২৩ শতাংশ বাড়তি দামের বোঝা। ক্রমাগত ব্যয় বাড়ায় খড়গে জাতীয় নিরাপত্তা দিবসে তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কতটুকু নিরাপত্তা নিশ্চিত হলো জ্বালানি খাতে।
কিন্তু দাম বাড়াই শেষ নয়। বৈশ্বিক ধাক্কায় হাঁটতে হচ্ছে জ্বালানি সাশ্রয়ী নীতিতেও, ঘাটতি মেটাতে হচ্ছে পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে। বিশ্ববাজারের কথা বলে জ্বালানি তেলের দামও বাড়ানো হয় ৯ মাসে দ্বিতীয়বারের মতো। আর আমদানি করা এলএনজির প্রভাবে বাড়ছে গ্যাসের দাম। আবার জ্বালানির বর্তমান সংকটও প্রভাব ফেলছে বৈশ্বিক পরিস্থিতি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে, নিজস্ব সম্পদ অনুসন্ধান না করে আমদানিনির্ভরতার ঝুঁকি কতটা?
ভূতত্ত্ববিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম বলেন, নিজেদের গ্যাস যদি অনেকটা তুলে রাখার ক্ষমতা অর্জন করতাম, তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব অন্য জায়গায় যতটা পড়েছে, আমাদের এখানে ততটা পড়ত না।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, আমদানিনির্ভর হলে বর্তমান সময়ের মতো এই ধরনের সমস্যা হতে পারে, সেটা সবাই বলবে। কারণ সরবরাহে ঘাটতি হতে পারে আবার মূল্যের ঝুঁকিও হতে পারে।
অথচ যে দিনটি স্মরণ করে পালিত হয় জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস, তার রয়েছে ঐতিহাসিক তাৎপর্য। ৯ আগস্ট ১৯৭৫। সপরিবারে নিহত হওয়ার মাত্র ৬ দিন আগে ব্রিটিশ কোম্পানি শেলের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে ৫টি গ্যাসক্ষেত্র কিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু। তখনকার সময়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭ থেকে ১৮ কোটি টাকায় কেনা তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, রশিদপুর ও কৈশালটিলা গ্যাসক্ষেত্র এখনো জোগান দিচ্ছে দেশে উৎপাদিত গ্যাসের ৪০ শতাংশেরই। আর বর্তমান মজুদের প্রায় অর্ধেকই এ ক্ষেত্রগুলোর।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর সেই দূরদর্শী সিদ্ধান্ত জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যে নজির তৈরি করেছিল, বর্তমানের আমদানিনির্ভর নীতি তার ঠিক উল্টো, যা তৈরি করছে নানা ঝুঁকি আর অনিশ্চয়তা।
অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে আদর্শ ছিল, তা থেকে আমাদের বিচ্যুতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছিল, নিজস্ব গ্যাস উত্তোলন করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে জ্বালানি কার্যক্রম চালাব।
যদিও এমন কিছু মানতে নারাজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের যতটুকু কাজ করার, তা আমরা সফলভাবে করেছি। কিন্তু যে সমস্যাটা আমাদের দেখা গেছে, সেটা হলো বিশ্বে একটা যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবে না।
অথচ বাস্তবতা হলো, অনুসন্ধান কার্যক্রমে গতি না থাকায় গত দুই যুগে ১৫টি সিএফ গ্যাস ব্যবহারের বিপরীতে আবিষ্কার হয়েছে মাত্র ২ টিসিএফ গ্যাস। আর এক দশকেও ঘরে তোলা যায়নি সমুদ্রজয়ের কোনো সুফল।






%20%E0%A6%8F%E0%A6%B0%20%E0%A7%A7%E0%A7%A6%E0%A6%AE%20%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%20%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A8%20(2).jpg)
%20%E0%A6%8F%E0%A6%B0%20%E0%A7%A7%E0%A7%A6%E0%A6%AE%20%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%20%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A8%20(3).jpg)
%20%E0%A6%8F%E0%A6%B0%20%E0%A7%A7%E0%A7%A6%E0%A6%AE%20%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%20%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A8%20(4).jpg)
%20%E0%A6%8F%E0%A6%B0%20%E0%A7%A7%E0%A7%A6%E0%A6%AE%20%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%20%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A8%20(1).jpg)