Latest Post
92 অন্যান্য 51 অর্থনীতি 24 আইন ও আদালত 76 আন্তর্জাতিক 613 এক ঝলক 3 কক্সবাজার 1 কবিতা 22 কিশোরগঞ্জ 4 কুড়িগ্রাম 6 কুমিল্লা 1 কুষ্টিয়া 3 কৃষি 107 কৃষি ও প্রকৃতি 10 ক্রিকেট 1 খাগড়াছড়ি 73 খেলাধুলা 49 গণমাধ্যম 12 গাইবান্ধা 1 গাজীপুর 17 চট্টগ্রাম 5 চাঁদপুর 5 চাঁপাইনবাবগঞ্জ 2 চুয়াডাঙ্গা 14 জয়পুরহাট 1 জাতীয় 3 জামালপুর 1 জোকস 6 ঝনিাইদহ 246 ঝালকাঠি 12 ঝিনাইদহ 4 টাঙ্গাইল 44 ঠাকুরগাঁও 39 ঢাকা 1 থী 4 দিনাজপুর 4807 দেশজুড়ে 42 ধর্ম 3437 নওগাঁ 14 নাটোর 2 নারায়ণগঞ্জ 1 নিহত ২ 1 নীলফামারীর 2 নেত্রকোনা 1 নোয়াখালী 3 পঞ্চগড় 4 পিরোজপু 2 প্রকৃতি 2807 প্রথম পাতা 23 প্রবাস 1 ফরিদপুর 17 ফিচার 8 ফুটবল 1 ফেনী 94 বগুড়া 2 বলিউড 58 বাগমারা 84 বিএমএসএফ 31 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 53 বিনোদন 51 বেনাপোল 2 ব্রাক্ষণবাড়িয়া 1 ব্রাহ্মণবাড়িয়া 51 ভিডিও 18 ভোলা 8 ভ্রমণ 59 ময়মুনসিংহ 1 মাগুরা 1 মাদারীপু 2 মাদারীপুর 1 মানিকগঞ্জ 1 মেহেরপুর 495 যশোর 5 রংপুর 103 রাজনীতি 3 রাজবাড়ী 95 রাজশাহী 3 লক্ষ্মীপুর 24 লাইফস্টাইল 2 লালমনিরহা 41 শিক্ষা 1 শ্রীপুর 891 সকল জেলা 2 সাতক্ষীরা 9 সিরাজগঞ্জ 3 সিলেট 63 সুনামগঞ্জ 31 স্বাস্থ্য 4 হবিগঞ্জ 1 হলিউড 10 bmsf

 সড়ক দূর্ঘটায় নিহত ২ আহত ৩

 

নওগাঁর মান্দায় সিমেন্ট ও আমবাহী দুই ট্রাকের মুখোমূখী সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। এবং আরো তিন জন আহত হয়েছেন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাতেই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার (০৩ জুলাই)ভোর রাতে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের সতীরহাট বাজার এলাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটেছে।



নওগাঁয় যুগান্তর প্রতিনিধিকে অব্যাহতি আত্মঘাতি বিএমএসএফ

বিএমএসএফ নিউজ: নওগাঁয় দৈনিক যুগান্তর জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলীকে অব্যাহতির ঘটনাটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছে বিএমএসএফ। একজন প্রতিনিধিকে পৃলিশি হয়রাণীকালে পাশে না দাঁড়িয়ে বরং তাকে পত্রিকা থেকে অব্যাহতির ঘটনা গোটা সাংবাদিক সমাজকে ভাবিয়ে তুলছে। কারণ; একজন প্রতিনিধি জীবন যৌবন উৎসর্গ করে একটি পত্রিকা আকঁড়ে ধরে থাকেন। সেই প্রতিনিধিকে যখন পুলিশ বা কোন গোষ্ঠীর হয়ে হয়রাণী করেন ঠিক সেই মূহুর্তে প্রতিনিধিকে না বাঁচিয়ে বরং বাঘের মুখে ঠেলে দেয়া আত্মঘাতিই নয় চরম বেঈমানীও বটে। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশের সমন্বয়কারী আহমেদ আবু জাফর এমন মন্তব্য করেছেন।


শনিবার বিএমএসএফের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এরুপ মন্তব্য করে যুগান্তরকে আব্বাস আলীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন।

দৈনিক যুগান্তর থেকে অব্যাহতির শিকার সাংবাদিক আব্বাস আলী বিএমএসএফকে জানান, তিনি এলাকার নানা অনিয়ম-দূর্ণীতির খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় তুলে ধরে আসছিলেন। সম্প্রতি তার এক ভাইয়ের স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যুকে পুঁজি করে পরিবারের নিকট একলক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। আমার পরিবার ঘুষ দিতে রাজী না হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে নানামূখী ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। 

নওগাঁয় যুগান্তর প্রতিনিধিকে অব্যাহতি আত্মঘাতি বিএমএসএফ
সম্প্রতি নওগাঁর মান্দার গনেশপুর ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও জন্মনিবন্ধনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যান আব্বাস ও তার সহকর্মীরা। এসময় গনেশপুর বিট পুলিশিং কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে স্থানীয় মেম্বর ও নাইটগার্ডের সহযোগিতায় ভিডিও সাক্ষাতকার গ্রহন করে চলে আসেন। এ ঘটনার জেরধরে বিট পুলিশের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে। জিডিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অফিসে ঢুকে নথি চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে সাংবাদিক আব্বাস আলীসহ ৫জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনাকে পুঁজি করে পুলিশের উর্ধতন একজন অফিসারের ফোনে যুগান্তর কর্তৃপক্ষ আব্বাস আলীকে ২৬ জুন অব্যাহতিপত্র পাঠান। 

সাংবাদিক আব্বাস জানান, আমি ৪/৫ বছর ধরে দৈনিক যুগান্তরের সাথে নিয়মিত কাজ করে আসছি। পদার্থ বিজ্ঞানে অনার্স-মাষ্টার্স সম্পন্ন করে গত ৭/৮ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথেই যুক্ত আছি। আব্বাস আলী বিষয়টি যুগান্তর কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করে পুনরায় বিবেচনা করতে বিশেষ অনুরোধ করেছেন। এভাবে একজন প্রতিনিধির বিপদে কর্তৃপক্ষ যেন ছেড়ে না যান।



নওগাঁয় কৃষকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
সালমান ফার্সী (সজল), নওগাঁ : নওগাঁয় নিখোঁজের দুই দিন পর কৃষক সুশীল চন্দ্র মন্ডলের (৪২) অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (০৩ জুলাই)সকাল ১০ টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের কাদিমপুর গ্রামের একটি বিল থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

সুশীল চন্দ্র মন্ডল নওগাঁ সদর থানার কোচগাড়ী (শশীর মোড়) গ্রামের মৃত নন্দন চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। 

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুশীল চন্দ্র গত বৃহস্পতিবার সকালে গরুর ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সুশীল চন্দ্রের ভাগ্নি জামাই অনুপ কুমার গতকাল শনিবার সকালে বিলের মধ্যে কৃষি কাজ করতে গিয়ে মরদেহ দেখতে পান। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতা পুলিশকে খবর দিলে পুুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা মরদেহটি উদ্ধার করে।

নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুশীল চন্দ্রের পরিবার থেকে থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে তার মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে।


নওগাঁয় দুই ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৩
সালমান ফার্সী (সজল), নওগাঁ : নওগাঁর মান্দায় সিমেন্ট ও আমবাহী দুই ট্রাকের মুখোমূখী সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। এবং আরো তিন জন আহত হয়েছেন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাতেই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার (০৩ জুলাই)ভোর রাতে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের সতীরহাট বাজার এলাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটেছে।


হতাহতরা সবাই আম ব্যবসায়ী। নিহত দুই জনের মধ্যে খলিল প্রামানিক রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের নিয়াত আলীর ছেলে। অপরজনের নাম শরিফুল ইসলাম জানা গেলেও  আহতদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। 


মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, শনিবার রাতে মান্দা উপজেলার ফেরিঘাট থেকে একটি ট্রাকে করে ৭শ’ বস্তা সিমেন্ট নিয়ে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক দিয়ে নওগাঁ শহরের দিকে যাচ্ছিল। অপরদিকে জেলার সাপাহার থেকে আম নিয়ে আম ব্যবসায়ীরা পিক-আপ যোগে আম নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার দিকে যাচ্ছিলেন। পথের মধ্যে মান্দার সতীরহাট বাজার এলাকায় মুখোমূখী সংঘর্ষে পিক-আপ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পিক-আপের মধ্যে থাকা আম ব্যবসায়ীদের মধ্যে খলিল ও শরিফুল ঘটনাস্থলেই মারা যান। অপর দিকে আহত তিন জনকে গুরুত্বর আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 


ওসি আরো জানান, দুর্ঘটনা কবলিত দুটি ট্রাক থানায় নেওয়া হয়েছে। ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
 

রাজশাহী বাগমারায় হেরােইন উদ্ধার ও ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার-৩


মো: সাইফুল ইসলাম, বাগমারা, রাজশাহী :  রাজশাহীর বাগমারার যোগীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) কবীর হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে হেরোইনসহ যোগীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একটি মামলা করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাগমারা থানার পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধা সাড়ে ৮ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যোগীপাড়া ইনচার্জ কবীর হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কাতিলা বাগপাড়ায় অভিযান চালায়। এসময় কাতিলা গ্রামের বাগপাড়ার মৃত দবির উদ্দিনের বাড়ির সামনের কাঁচা রাস্তার উপর থেকে তিন পুরিয়া হেরোইনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-যোগীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু নাসির মুঞ্জু (৫৫), তার দুই সহযোগী কাতিলা গ্রামের বাগপাড়ার মুনসুর রহমান (৩৬) ও ভাগনদী সরদারপাড়ার আসাদুল ইসলাম (৩৩)।

এসময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে নগদ দুই হাজার সাতশ টাকা উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় ভাগনদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন বাদি হয়ে গ্রেপতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা করেন। স্থানীয়রা ইউপি সদস্য মুঞ্জুরকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে যোগীপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) কবীর হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন থেকে মাদক সেবন ও বিক্রি করে আসছে এমন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের তিন গ্রাম হেরোইন ও নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।


শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভুলে যাওয়া একজন আহছানউল্লা


তৌফিক তাপস : মহাকালের রথে চড়ে আজ শতবর্ষে পদার্পণ করছে বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্পন্দন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সেই বিশেষ বৈশিষ্টমণ্ডিত বিদ্যায়তন যা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠিত হয়নি বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রায় সব আন্দোলনই অঙ্কুরিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী প্রাঙ্গণে। একটি জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী ও জ্ঞান চর্চার প্রধান বাতিঘর হিসেবে এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক পালাবদলের প্রধানতম কেন্দ্র হিসেবে বিগত একশ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলায় রয়েছে বৈচিত্রময় আড়ম্বর। দীর্ঘ এ চলার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়উচ্চ শিক্ষায় যেমন নেতৃত্ব দিয়েছে, তেমনি পথ দেখিয়েছে বাঙালি জাতির ক্রান্তিলগ্নেও। বিগত শতবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, প্রশাসক, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজচিন্তকদের তৈরি করেছে। এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হলে গোটা বাঙালি জাতি উত্তরণের দেখা পেত কি না সেটিই আমাদের জাতীয় ইতিহাসের বড় প্রশ্ন। 


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা দু’টি অংশে বিভক্ত হয়েছিল। কলকাতাকেন্দ্রিক কিছু বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সুচনালগ্ন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়তাদের বিরোধীতার মুখে পড়ে। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার পক্ষে অনেকে অনড় অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন, নানামুখী অবদানে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক ও মূল প্রস্তাবক ছিলেন নবাব সলিমুল্লাহ। ১৯১৫ সালে তার মৃত্যুর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনটিকে শক্ত হাতে এগিয়ে নেন ধনবাড়ির জমিদার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন পর্বে রাজনৈতিক সমর্থন ও পৃষ্টপোষকতা করেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। শুরু থেকেই ইংরেজ সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে এগিয়ে নেয় ।

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভুলে যাওয়া একজন আহছানউল্লা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠাপর্বের ইতিহাসে এসব আলোচিত রাজনৈতিক তৎপরতার বাইরে প্রশাসনিক ও বুদ্ধিভিত্তিক তৎপরতাও বেশ কাজে দিয়েছিল। কিন্তু এসব বুদ্ধিভিত্তিক তৎপরতার খবর ইতিহাসের মূল আলোচ্যে খুব বেশি স্থান পায়নি অথবা ইতিহাসে এই পর্বটি উপেক্ষিত থেকেছে। অনেক বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ রাজনৈতিক পরিমন্ডলের বাইরে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন সরকারের তেমনই একজন শিক্ষাপ্রশাসক যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটে অসামান্য অবদান রাখেন, কিন্তু রাজনৈতিক ডামাডোলের নীচে তাঁর বুদ্ধিভিত্তিক লড়াইয়ের খবর অনেক দিন আমাদের ইতিহাসে উপেক্ষিত রয়েছে। অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার একবারে সূচনালগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত প্রতিটি পর্বে প্রত্যক্ষ সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা। ১৯১২ সালে নাথান কমিশনের টিচিং সাব কমিটির সদস্য, ১৯১৪ সালে হর্ণেল কমিটির সদস্য, ১৯১৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের কাছে সুস্পষ্ট জোরালো বক্তব্য, ১৯১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার খসড়া আইনের ওপর মতামত প্রদানকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট বিশেষ কমিটিতে একমাত্র বাঙালি মুসলমান হিসেবে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে সর্বত্রই অনড় অবস্থান গ্রহণ করেন।


আহ্ছানউল্লা ছিলেন প্রথম ও একমাত্র ভারতীয় মুসলিম যিনি অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের সহকারি পরিচালক পদে আসীন হয়েছিলেন, ইন্ডিয়ান এডুকেশন সার্ভিসেও তিনিই প্রথম ভারতীয় আই.ই.এস এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য। ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় ও মৌলিক প্রায়োগিক চিন্তা-চেতনার জন্য তিনি ১৯১১ সালে ব্রিটেনের রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের ফেলো মনোনীত হন। তখন থেকেই অবিভক্ত বাংলায় তাঁর শিক্ষাভাবনাকে ব্রিটিশ সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতো।


১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষনায় পূর্ববঙ্গের জনগণ, বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সম্প্রদায় নিদারূন আশাহত হয়। নবাব সলিমুল্লাহ বঙ্গভঙ্গ রদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে ১৭ এবং ২০ ডিসেম্বর দুটি চিঠি পাঠান ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জকে। ১৭ তারিখের চিঠিতে তিনি বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে পূর্ববাংলার জনগনের মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা এবং ২০ তারিখের চিঠিতে পূর্ববাংলার সংখ্যাগুরু মুসলমানদের সার্বিক উন্নতিবিধানকল্পে শিক্ষাব্যবস্থায় কিছু অভিনব সংস্কারের প্রস্তাবনা পাঠান। পত্র পাওয়ার পরদিনই ভাইসরয় তার শিক্ষা উপদেষ্টা স্যার এইচ বাটলারকে নবাবের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তার অভিমত জানতে চেয়ে নোট দেন। এইচ বাটলার নবাব সলিমুল্লাহর প্রস্তাবে ভাইসরয়কে ইতিবাচক মতামত প্রেরণ করেন। ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি ভাইসরয় ঢাকা সফরে এলে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ এবং এ কে ফজলুল হক সহ পূর্ববঙ্গের ১৯ জন মুসলিম নেতৃবৃন্দ তার সাথে সাক্ষাত করে বেশ কিছু দাবি পেশ করেন। ভাইসরয় প্রতিনিধিদলকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সরকারের সক্রিয় বিবেচনার আশ্বাস দেন। প্রতিক্রিয়ায় ১৬ ফেব্রুয়ারি ড. রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হিন্দু প্রতিনিধিদল ভাইসরয়ের সাথে সাক্ষাত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করে, কিন্তু ভাইসরয় তাদের আপত্তিতে সম্মত হননি। ২৭ মে বেঙ্গল সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রেজিল্যুশন জারি করে এবং স্কিম তৈরির জন্য ব্যারিস্টার নাথানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। এসময় একজন ‘টিচিং স্কলার’ হিসেবে আহ্ছানউল্লাকে নাথান কমিটির টিচিং সাব কমিটির সদস্য করা হয়। তখন তিনি প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান পদ্ধতি, বিষয়ভিত্তিক অনুষদ ও শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে তার মতামত উপস্থাপন করেন।



প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ থেমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১৪ সালের ১৪ এপ্রিল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি মোহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্সে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকায় বিশ্ব¦বিদ্যালয় স্থাপনে বিলম্বে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই উদ্বেগ নিরসনে বাংলার ডিপিআই হর্নেলর নেতৃত্বে বাংলা সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে ‘হর্ণেল কমিটি’ গঠন করে। প্রেসিডেন্সি বিভাগের তৎকালীন এডিশনাল ইন্সপেক্টর আহছানউল্লাকে কমিটির অন্যতম সদস্য করা হয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে মুসলমানদের পিছিয়ে কারণ ও উত্তরণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আহ্ছানউল্লা। এই প্রতিবেদন পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও আইন প্রণয়নে তথ্য উপাত্ত হিসেবে বেশ গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হয়।


১৯১৭ সালে গঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (স্যাডলার কমিশন) দেশের শিক্ষাবিদ ও শিক্ষানুরাগীদের কাছ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে লিখিত অভিমত চেয়ে পাঠায়। আহছানউল্লা ২২ টি প্রশ্নের মধ্যে আটটি বিষয়ভুক্ত প্রশ্নের ওপর তার সুচিন্তিত অভিমত পেশ করেন। তার অভিমতসমূহ কমিশন রিপোর্টের ৯ম, ১০ম, ১১শ ও ১২শ খন্ডে সংযোজিত হয়। কমিশনের চার নম্বর প্রশ্নের বিষয়বস্তুই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রসঙ্গটি। মূলত এই বিষয়টিই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আপত্তি ও নেতিবাচক মনোভাবের ভিত্তি। চার নম্বর প্রশ্নের জবাবে খানবাহাদুর আহছানউল্লা তার স্মারকলিপিতে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান সীমাবদ্ধতার চিত্র তুলে ধরেন। লিখিত অন্যান্য অভিমতগুলোতেও তিনি যে নির্দিষ্ট প্রস্তাবমালা পেশ করেন তা তখনকার শিক্ষাব্যবস্থায় অবিকৃতভাবে প্রতিফলিত হতে দেখা যায়।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চুড়ান্ত পর্বে আহছানউল্লা আরও প্রত্যক্ষ ও অবিসংবাদিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ১৯১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল উত্থাপিত হয়। সরকার ২৩ সেপ্টেম্বর পাঠনো একটি চিঠিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে খসড়া আইনের ওপর চুড়ান্ত অভিমত প্রেরণের আহবান জানায়। এই প্রেক্ষিতে ১ নভেম্বর সিনেটের ১৪তম অধিবেশনে ৯ সদস্য বিশিষ্ট সিনেট কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটিতে একমাত্র বাঙালি মুসলমান সদস্য ছিলেন খানবাহাদুর আহছানউল্লা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে তখনো একমাত্র বাঙালি মুসলমান হিসেবে তার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ছিল। খসড়া বিল পর্যালোচনা কমিটির সদস্য হিসেবে বিলের প্রতিটি অনুচ্ছেদের ধারা উপধারায় কমিটির অন্যান্য প্রভাবশালী সদস্যদের সাথে চরম প্রতিকূলতা ও তীব্র বাদানুবাদে তিনি তার জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন। কমিটির অধিকাংশ সদস্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধাচরণ করেন। পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি একাই বুক চিতিয়ে বুদ্ধিভিত্তিক লড়াইটি চালিয়ে যান। স্বাভাাবিকভাবেই অন্যদের সাথে আহ্ছানউল্লা একমত হতে পারেননি, সে কারণে ২৭ নভেম্বর ১৯১৯ তারিখে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার পক্ষে চার পৃষ্ঠার একটি নোট অব ডিসেন্ট দাখিল করেন। তার নোট অব ডিসেন্টটি কমিটির রিপোর্টের সাথে সংযুক্ত হয়। 


১৯২০ সালের ২৩ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। নাথান ও হর্নেল কমিটিতে দেয়া আহ্ছানউল্লার সুপারিশ, স্যাডলার কমিশনে দেয়া লিখিত অভিমত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট দেয়া যুক্তিতর্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠায় স্পেশাল কমিটিতে দেয়া অভিমত, নোট অব ডিসেন্টের বক্তব্য সকল বিষয়েরই স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়আইনে। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মেম্বর (সিনেট) ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক পথচলার প্রথম একযুগ তিনি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী ছিলেন আহ্ছানউল্লারই পুত্রবধু ফজিলাতুন্নেছা জোহা।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস মানে বাঙালি জাতির উত্থানের ইতিহাস। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে, শিক্ষা প্রশাসক হিসেবে, বাঙালি মুসলমানের আত্মপ্রত্যয়ী প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠায় অন্যান্য আলোকবর্তিকাদের মতো খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার অবদানও অনস্বীকার্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের মূল আলোচনায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লাকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। শতবছর পরে এসেও যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস এই প্রজন্মের কাছে উন্মোচন না করা যায় তবে তা সত্যিই বেদনার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ছিল রাজনৈতিক ও বুদ্ধিভিত্তিক সংগ্রামের সমন্বিত প্রয়াস। বাঙালি জাতির বাতিঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়জ্ঞানের আলো জ্বালুক অনাগত কাল। 


লেখক: পরিচালক, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget