আজকের দেশ সংবাদ:
নওগাঁর মান্দায় শিক্ষক ও তার অনুগত বাহিনী কর্তৃক গ্রাম পুলিশ ও উপজেলার ফেটগ্রামের ময়েন উদ্দিনের ছেলে মোজাম্মেল হক সুজন (৩৪) কে মারপিট করা হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের শিশইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ মারপিটের এ ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনায় ঐ গ্রাম পুলিশ বাদী হয়ে শিক্ষকসহ তিনজনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর শনিবার সকালে পুলিশ এক অভিযান চালিয়ে উপজেলার গোয়ালপাড়া মোড় থেকে মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মাহফুজুর রহমানকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। আটক মাহফুজুর রহমান উপজেলার শিশইল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিছার রহমানে ছেলে এবং উপজেলার মৈনম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শিশইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিদ্যালয়ের আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান চলছিল। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য ১০ জন গ্রাম পুলিশ নিযুক্ত ছিল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সময় মঞ্চের নিচে থাকা দর্শকরা গানের তালে নাচছিল। এ সময় কয়েকজন উল্টে পড়ে যায়। সেখান থেকে গ্রাম পুলিশ মোজাম্মেল হক সুজন শিশইল গ্রামের আবদুল হান্নানের ছেলেকে (নাম জানা যায়নি) উদ্ধার করে বাহিরে নিয়ে আসে। তার ছেলেকে ভিড়ের ভিতর থেকে বাহির করে নিয়ে আসার সময় ঠেলাঠেলির একটু ধাক্কা লাগে। ছেলেটি তার বাবাকে অভিযোগ করে গ্রাম পুলিশ তাকে মেরেছে।
এসময় আবদুল হান্নান মৌখিক অভিযোগ করে মাহফুজুর রহমানের কাছে। এরপর গ্রাম পুলিশ সুজনকে ফাঁকাস্থানে ডেকে নিয়ে এসে মাহফুজুর রহমান ও আবদুল হান্নানসহ ৪/৫ জন মিলে মারপিট করে। সংবাদ পেয়ে তার সহকর্মী গ্রাম পুলিশরা ছুটে এসে তাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর রাতেই তাকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে সেখানই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন সুজন।
চিকিৎসাধীন গ্রাম পুলিশ মোজাম্মেল হক সুজন বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভিড়ের মধ্যে কিছু ছেলে জটলা পাকিয়ে কাউকে মারধোর করছিল। এসময় ভীড়ের মধ্যে ছেলেটি (আবদুল হান্নানের) পড়ে গেলে আমি এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বাহিরে নিয়ে আসি। কিন্তু দু:খের বিষয় আবদুল হান্নান উল্টো আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, আমি নাকি তার ছেলেকে মেরেছি। এ জন্য চরম ক্ষিপ্ত হয়ে মাহফুজুর রহমান ও আবদুল হান্নানসহ ৪/৫ জন মিলে আমাকে মারপিট করেছে।
ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, অনুষ্ঠান শেষে মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে বাবু. হান্নানসহ কয়েকজন সংঘবদ্ধ হয়ে গ্রামপুলিশ সুজনের ওপর হামলা করে।
মান্দা থানার পরিদর্শক (ওসি) আনিছুর রহমান জানান, গ্রাম পুলিশ মোজাম্মেল হক সুজন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। আসামী মাহফুজুর রহমানকে আটক করে গত শনিবার নওগাঁ জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন